শনিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৮

চিরদীপ সরকার

                       

   মা
                                                                        

আবার পাশের বাড়ির চক্কোত্তিদা পরশু দিন শাসিয়ে গেছে।
"বাড়ির পার্শনাল ম্যাটার ছাদ থেকে ভিডিও করে মিডিয়ায় দেওয়া।দাঁড়ান আপনাদের দেখাচ্ছি।উপর থেকে ছ' ইঞ্চি ছোটো করে দিলে না কেউ ভিডিও করতে আসবে,না আসবে তেতো ভাত খেতে!জীবনটাই তেতো করে দেবো! বুঝলেন।"
পাশের বাড়ির শিবু চক্কোত্তি।প্রতি রাতে গিলে এসে মারধর করে বৃদ্ধা অসুস্থ মাকে।সম্পত্তিগত বিবাদ তাদের ভাইদের মধ্যে দীর্ঘদিনের।মা মারা গেলে সম্পত্তি ভাগে সুবিধা। তাছাড়া অসুস্থ মা, মায়ের দেখাশোনা এখন বোঝা।তাই ফ্যাঁসাদে পড়েছেন মা,ভাগের মা।দুই মাসের পালা।এরপর ছোটোর কাছে। যাতে নিজে থেকে অত্যাচারের ভয়ে আসতে না চায় সেই ভেবেও মারধর হতে পারে হয়তো। যাইহোক, তাদের ও পাশের বাড়ির মাঝে একটা সাড়ে চার ফুট উচ্চতার,পাঁচ ইঞ্চির দেওয়ালের পার্থক্য ও পার্থক্য মানসিকতার।জানালা দিয়ে এ বাড়ির ভিতরটা দেখা যায়।দেখা যায় লালসা, হিংস্রতা। ঝগড়া ঝাটি পর্যন্ত ঠিক আছে কিন্তু বৃদ্ধা অসুস্থ মাকে মারধর, বৃদ্ধার যন্ত্রণা কাতরতা মেনে নিতে পারেননি পাশের বাড়ির উন্নতি ঠাকুর।অনেক প্রতিবাদ করেছেন, কাজ হয়নি।বাধ্য হয়ে মিডিয়ায় দিয়েছেন ভিডিও করে।
        এইবার চক্কোত্তির উপর ছায়া হয়ে থাকা বটদের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে ব্যাপারটা।পুলিশ এসেছে।অসুস্থ মা খুব নীচু স্বরে কিছু বলতে চাইছেন।হৈ হট্টোগোলের মাঝে কেউ শুনতে পাচ্ছে না।সব শক্তি একত্র করে চক্কোত্তি বাবুর মা বলে উঠলেন "চু....প।চুপ করো সবাই, চুপ কর বাবা শিবু, তোর হার্টের অসুখ।প্রেসারটা চড়ে যাবে খুব।তোমরা শোনো শিবু আমাকে কিচ্ছু করে নি,কিচ্ছু করে না। কিচ্ছু না, কিচ্ছু না.." 
একটা নিস্তব্ধ ক্ষণে আচ্ছন্ন হয়ে গেল চত্বর।সবাই হয়তো ভাবল- মা, মা-ই হয়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন