এবারের
গল্প "হেঁসেল সম্রাজ্ঞী"
লিখছেন বনবীথি
পাত্র।
বনবীথি’র কাছ থেকে ওর সম্পর্কে যা যা জানা গেল সেগুলি এইরূপ,উনি পূর্ব বর্ধমান জেলার
পাটুলিতে থাকেন। হাত-খুন্তির সাথে বন্ধুত্ব বিয়ের পর । কিন্তু ভালো লাগে রান্নাটা
। নতুন নতুন রেসিপি বানানোর বদঅভ্যাস আছে একটু । লিখতে ভালোবাসি , তবে তার চেয়ে বেশি ভালোবাসি পড়তে ।
"হেঁসেল সম্রাজ্ঞী"র আজ ফাইনাল
এপিসোড । পঞ্চাশজন প্রতিযোগী থেকে বাদ হতে হতে আজ ফাইনালের মঞ্চে পাঁচজন । নৈঋতা
কোনদিন-ই রন্ধন পটিয়সী নয় , বরঞ্চ খাদ্যরসিকই বলা চলে । বিয়ের আগে তো কোনদিন রান্নাঘরে
ঢুকেছে বলেও মনে পড়ে না । বিয়ের পরে মামণির নতুন নতুন রান্না খেতে খেতে নিজেও নতুন
কিছু রান্না করার নেশাটা চেপে গিয়েছে নৈঋতার মনে । টিভিতে যেদিন "হেঁসেল
সাম্রাজ্ঞী"র এডিশনের জন্য একান্ত নিজের তৈরি রেসিপি চেয়েছিল , সেদিন খেলাচ্ছলেই মেলটা করেছিল নৈঋতা ।
সেদিন ভাবতেও পারেনি যে "হেঁসেল সাম্রাজ্ঞী"র ফাইনাল মঞ্চ অবধি আসতে
পারবে । ভেতরের টেনশন কিছুতেই চেপে রাখতে পারছে না , অসম্ভব ঘাম হচ্ছে । কি জানি আজ পারবে তো
!!!! মামণি বারবার বলে দিয়েছে , তুই তো খেতে ভালোবাসিস , নিজের স্বাদ আর জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে
ভালোবেসে রান্নাটা করবি । কিন্তু আজ বড্ড নার্ভাস লাগছে । উত্তেজনার পারদ আরো চড়তে
থাকল যখন নিরুপম মল্লিককে দেখল বিচারকদের মধ্যে । নৈঋতার স্বপ্নের রবীন্দ্রসঙ্গীত
গায়ক , কিশোরীবেলার প্রথম ভালোলাগা
।তিনটে পর্বের দুটিতে উত্তীর্ণ হয়ে প্রতিযোগিতার শেষ পর্যায়ে তিনজন । শেষ রাউন্ড
বিচারকের পছন্দ ।মনে মনে ঠাকুরকে স্মরণ করছে নৈঋতা , ভগবান এবারের মতো উতড়ে দাও ।নিরুপম
মল্লিক ওর সাথে কথা বলছে , হাত-পা যেন শিরশির করছে নৈঋতার । মনে মনে এমনটাই আশঙ্কা করছিল
নৈঋতা । নিরুপম মল্লিক বললেন , ঠাকুর বাড়ির একটা স্পেশাল খাবার বানাতে । ইস্ হাত কামড়াতে
ইচ্ছা করছে নৈঋতার । কেন যে একটু ঠাকুর বাড়ির রেসিপিগুলোতে চোখ বুলিয়ে এলো না !!!!
উপকরণের ঝাঁপি খুলে তো চোখ কপালে ওঠার জোগাড় । কি বানাবে এইগুলো দিয়ে ???? সময় মাত্র ৪৫
মিনিট ।হঠাৎ করে
মনে পড়ে গেলে , গানের দিদিমণি একবার পঁচিশে
বৈশাখের অনুষ্ঠানে এমনি কি একটা যেন খাইয়েছিলেন । বলেছিলেন এটা ঠাকুরবাড়ির রান্না
। আর দেরি না করে চটপট রান্না শুরু করে দেয় । বানিয়ে ফেলে মটরশুটির চপ ।মাত্র তিন
নম্বরের জন্য
নৈঋতা ফার্স্ট রানার আপ । একটু মনখারাপ হলেও নিরুপম মল্লিকের সাথে সেলফি তুলতে
পেরেই ধন্য নৈঋতা । জীবনে কখনো ভাবেনি যে নিরুপম মল্লিকের সাথে একফ্রেমে তার ছবি
থাকবে । পুরষ্কার বিতরণীর শেষে ডিনারের জব্বর ব্যবস্থা ।ওরা না হয় জমিয়ে ডিনার
করুক । আমরা ততক্ষণ জেনে নি
"কড়াইশুটির চপ"
এর রেসিপিটা ।উপকরণ :--- #আলু_500গ্রাম #মটরশুঁটি_500গ্রাম #বিস্কুটের_গুঁড়ো #তেল #ঘি #হিং #গরমমশলা #আদা #শুকনো_লঙ্কা_বাটা #এরারুট #লবণ #চিনিপ্রণালী :---মটরশুঁটি ছাড়িয়ে মিহি করে বেটে নিন । ঘি গরভ
করে হিং ফোড়ন দিন । মটরশুঁটি বাটা, আদা ও শুকনো লঙ্কবা টা দিয়ে খুব ভাল করে কষিয়ে নিন । লবণ ও
চিনি দিন স্বাদমত । কষানো হলে গরমমশলা গুঁড়ো দিয়ে নামিয়ে নিন।আলু সিদ্ধ ছাড়িয়ে গরম
থাকতে থাকতে স্বাদমত লবণ ও ঝাল দিয়ে খুব ভাল করে মেখে নিন ।এরার ঘন করে এরারুট
গুলে রাখতে হবে।আলুর খোলের মধ্যে পুর দিয়ে চপের আকারে গড়ে দিয়ে দুপিঠে বিস্কুটের
গুঁড়ো মাখিয়ে নিন। এরারুটের গোলায় ডুবিয়ে ডোবা তেলে ভেজে তুলে নিন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন