রুমাল
সন্ধ্যে পৌনে সাতটায় বুকে ব্যাথা নিয়ে নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে সাতাশি বছরের অমিতাভ বাবু যখন রাত বারোটা নাগাদ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন, তখনো তাঁর হাতের মুঠিতে শক্ত করে ধরা হলদে হয়ে আসা আকাশী রঙের সিল্কের রুমাল।
রুমালের এক কোণে লেখা 'এ'।
দু'টো কেমো নিয়ে মাথায় চুল উঠে যাওয়ার পর অমিতাভ বাবু প্রতিদিন যত্ন করে রুমালটা বেঁধে দিতেন অণিমাদেবীর মাথায়।
পয়ঁত্রিশ বছর আগে চতুর্থ কেমোটার পর, অমিতাভ বাবুকে ছেড়ে চলে গেলেন অণিমাদেবী আর সেদিন থেকে অমিতাভ বাবুর সর্বক্ষণের সঙ্গী এই রুমালটা।
ডেডবডি বের করে, কেবিন নাম্বার ট্যু হান্ড্রেড ফোরের বেডটা ক্লিন করে, ওয়ার্ড বয় একটা হলদেটে নোংরা রুমাল ছুঁড়ে ফেলে দিলো ওয়েস্ট বিনে।
পঞ্চাশ বছর আগে এক ঝকঝকে সকালে গ্যাংটকে চাম্বালামার দোকানের সামনে ঝুলন্ত একটা হাল্কা আকাশী রঙের রুমাল দেখে এক তরুণী তার সঙ্গীকে হাত ধরে টেনেছিলেন।
কাল ভোরবেলা সুইপার এলে, ওয়েস্ট বিনে পড়ে থাকা হলদে রুমালটা চলে যাবে গারবেজ ভ্যাটে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন