সোমবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৮

মেঘশ্রী ব্যানার্জী



#বড়গল্প
#বোধন


(১)
- 'সুপ্রিয়াদি তোমার মোবাইলটা কখন থেকে কেঁপে যাচ্ছে। ধরে নাও।'
- 'তুই লেখ ঠিক করে যা বলছি। ফোন বাজুক। গতকালের ভুল রিপিট না হয়।'
প্যাথোলজি সেন্টারের টেকনিশিয়ান সুপ্রিয়া নিজের কাজে খুব সিরিয়াস। তার উপর রিডিং গুলো লিখছে যে মেয়েটি সে নতুন আর তার বয়সটাও কম। কালই একটা ভুল করে ফেলেছিল। অবশ্য সুপ্রিয়া শুধরে দিয়েছে। তাই কোনভাবেই অন্যমনস্কতাকে প্রশ্রয় দেয়না সে। 
- 'বেডের ওপাশে টিস্যু আছে। আপনি ওখানে নেমে জেলটা মুছে নিন।'
এই মেয়েটি প্রথমবার ইউ.এস.জি করাচ্ছে। নরম করে ইন্সট্রাকশন দেয় সুপ্রিয়া। মোবাইলটা আবার কেঁপে ওঠে। চেনা কোন নাম নয়। টেবিলে ওটাকে নামিয়ে রেখে অপেক্ষারত পরের জনকে ডেকে নেয়। এক মাঝবয়সী দেহাতি লোক। প্রেসক্রিপশন আগেই নেওয়া ছিল। তাকে হিন্দীতে বোঝাতে শুরু করতে না করতেই হুড়মুড়িয়ে ঢুকল রিসেপশনিস্ট সুমনা।
-'সুপ্রিয়াদি সেই অ্যাডভোকেট বারবার ফোন করছেন গো! তোমাকে ফোনে পাননি। এক্ষুনি কথা বলবেন বলছেন!'
-'আমার সেল নাম্বার উনি পান কি করে? আমি এই তো ঘন্টা খানেক আগে কথা বলে এলাম ফেস টু ফেস! আবার কি চাই? আচ্ছা সমস্যা তো!' এবার মেজাজ হারায় সুপ্রিয়া।
-'আরে আমাকেই তো জিজ্ঞেস করতে লেগেছেন বারবার- রিপোর্টে কি আছে - এক্স না ওয়াই? আমি জানিনা বলাতে তোমাকে ফোন করেছেন বোধহয়। তুমি ওঠাওনি তাই আবার রিসেপশনে ফোন করেছেন! আমি কি করি বলোতো!' কাঁদো কাঁদো হয় সুমনা।
-'আরে ঘাবড়াবার কি আছে? বলো এটা আইনত অপরাধ!' কথায় কথায় ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ একদম ভালো লাগে না সুপ্রিয়ার।
-'দিদি বাসু স্যর নাকি ওনাকে কল করে জেনে নিতে বলেছেন। উনি হুমকি দিচ্ছেন না বললে মি: বাসুকে জানিয়ে দেবেন!' গলা নামিয়ে বলে সুমনা।
এবার বিরক্তিতে মুখটা কুঁচকে যায় সুপ্রিয়ার। মি: বাসু এই সংস্থার গভর্নিং বডির একজন। লোকটার কিছু পলিটিক্যাল হোল্ডও আছে। ঠিক সৎ বলা যায়না। 
-'আচ্ছা তুমি যাও আমি দেখছি। 
আরে!! আপ অভিতক খাড়ে কিঁউ হ্যায়? লেটিয়ে উধার...' 
কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সুপ্রিয়া। কিন্তু মনে মনে প্রস্তুতি চলতে থাকে আরেক লড়াইয়ের। ভালোই জানে সুপ্রিয়া এবার মি: বাসুর কেবিনে তার ডাক পড়তে চলেছে।
যা ভেবেছিল ঠিক তাই! সুমনা বলে যাবার পরও যখন সুপ্রিয়া ব্যাপারটা পাত্তা দিল না মি: বাসু তাকে ডেকে পাঠালেন সেদিনই বিকেলে। আজ সারাদিন প্রচুর পেশেন্ট ছিল। ক্লান্ত শরীর আর অবসন্ন মনটাকে টেনে নিয়ে গেল সুপ্রিয়া একটা অনিবার্য পরিণতির দিকে। ঘরে ঢুকতেই ভনিতা না করে মি: বাসু সরাসরি আক্রমণে এলেন 
-'আমার ক্লিয়ার ইনস্ট্রাকশন থাকা সত্ত্বেও আপনি টেস্ট রেজাল্ট কেন জানাচ্ছেন না মি: চ্যাটার্জীকে?'
-'নিশ্চয় জানাবো। আপনার অফসিয়াল প্যাডে লিখিত ইনস্ট্রাকশন দিন তারপর। আসি তাহলে?' 
নমস্কার ঠুকে বেরিয়ে পড়ে সুপ্রিয়া - পিছনের দুজোড়া শিকার ফসকে যাওয়া আশাহত বাজের কুটিল দৃষ্টিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে। খুব ভালো করেই জানে সুপ্রিয়া আজ না হোক কাল নয়তো পরশু তাকে কোন অযুহাত দেখিয়ে কাজ থেকে বের করে দেওয়া হবে বা এর চেয়েও খারাপ কিছু। সে একা মানুষ। তার অভিজ্ঞতা আর কর্মদক্ষতা কোথাও না কোথাও চাকরি ঠিক পাইয়ে দেবে। তবু এই অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াবে না সুপ্রিয়া - যেমন মাথা নোয়াননি তার মা। মা শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রতিবাদের আগুন জ্বেলে বেরিয়ে না এলে কবেই প্লাস্টিক বন্দী এক রক্তাক্ত ফিটাস হয়ে কুকুরের খিদে মেটাতো সুপ্রিয়া ! 

(২)
বলাকা গলি থেকে শেষ পথটুকু প্রায় উড়ে এলো অটো স্ট্যান্ডে। এসময়ে বড্ড লাইন পড়ে। আজ এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে। যদিও পুজোর ছুটি পড়ার দিন তেমন ক্লাস হবে না তবু দেরি হলে অ্যাটেন্ডেন্স নিয়ে সমস্যা করেন ব্যানার্জী ম্যাম। অটো স্ট্যান্ডে এসে সামান্য চমকায়! উৎসবের পরিবেশ পুরো। ড্রাইভাররা সবাই হাসছে আর একটা ছেলে যার অটোতেই বেশিরভাগ সময় যায় বলাকা সে সবাইকে একটা প্যাকেট থেকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। এদিকে লাইন লম্বা হচ্ছে ! অনেকে বিরক্তও বেশ। একজন একজন করে অটো স্টার্ট দিতে শুরু করল। প্রথম চারটে বেরিয়ে যাবার পর পাঁচ নম্বরে জায়গা হল বলাকার। ভাগ্যক্রমে সেই ছেলেটিরই অটো! কৌতূহলী হয় বলাকা
-'তোমরা কি এবার পুজো করছ নাকি? এত খুশি সব?'
-'না দিদি! আমার ঘরে মা দুগ্গা এয়েচেন! বউ এক ফুটফুটে মেয়ে নিয়ে ঘরে এলো কাল। দেবিপক্ষে এমন আশীব্বাদ পেলাম তাই আরকি একটু খাওয়া দাওয়া!! মিষ্টি নিন না সবাই!' একগাল হেসে সে চারজন যাত্রীকে লাড্ডু ধরিয়ে দিল একেকটা - যেন মা দুর্গার আগমনে দক্ষরাজ প্রজাদের রত্ন বিলোচ্ছেন!
দশ মিনিট অটোয় গিয়ে এম.জি. থেকে মেট্রো ধরে কলকাতা ময়দান, সেখান থেকে দশ পনেরো মিনিট হেঁটে তবে স্কুলে পৌঁছবে বলাকা। আজ আর পা চলছে না। মেট্রো থেকে নেমে স্টেশনেই বসে রইল অনেকক্ষণ। হাতে সেই লাড্ডুটা ধরাই আছে! বলাকা স্মৃতিযানে চড়ে কয়েক মাস আগে ফিরে গেছে।
প্রথমবার মা হওয়াটা আলাদাই একটা অনুভূতি! সমীরণ আর তার ছোট্ট বেবিটাকে নিয়ে কত্ত জল্পনা কল্পনা! প্রথম ইউ.এস.জি. রিপোর্টটা কত রাত যে বালিশের পাশে নিয়ে শুয়েছে। ছবি দেখে কিছুই বুঝত না, তবু দেখে দেখে আশ মিটত না । তার ছেলেমানুষিতে খুব হাসত সমীরণ। তাদের ভালোবেসে বিয়ে। বন্ধন আরও মজবুত হতে চলেছে। তুরীয় আনন্দে দিন কাটছে বলাকার!
পরের ইউ.এস.জি. হবার পর থেকেই পাল্টে গেল সব। শ্বশুর শাশুড়ি যারা কিনা এত আনন্দে ছিলেন এত যত্ন করছিলেন - সবাই গম্ভীর হয়ে গেলেন। সমীরণও একটা চাপা টেনশনে। কাকে যেন বারবার ফোন করছে! বলাকার সাথে ভালো করে কথাই বলছে না!  বলাকা বুঝতে পারছে সাংঘাতিক একটা সমস্যা আছে তার রিপোর্টে - তবে কি বাচ্চাটা আর নেই? নাকি কোন অ্যাবনর্মালিটি নিয়ে জন্মাতে চলেছে সে? সমীরণ সেজন্যই হয়তো ফেস করতে চাইছে না বলাকাকে - জানেই তো কত আশায় ভালোবাসায় জড়িয়ে আছে বলাকা তার বেবিকে!
কদিন পরে সমীরণ বলাকাকে নিয়ে যেতে চাইল অন্য কোন এক নামকরা ডাক্তারের কাছে। ঠিকই ভেবেছে বলাকা নিশ্চয় তার কম্প্লিকেটেড প্রেগনেন্সি! বাড়ির গাড়িতেই বেরোল তারা। অজানা আশঙ্কায় কেঁদেই চলেছে বলাকা! কি জানি নতুন ডাক্তার কি বলবে!
যেমনটা ভেবেছিল বড় কোন ডাক্তারের চেম্বার হবে তেমনটা নয়তো! ওরা বসতেই একটা ফর্ম দিয়ে গেল নার্স। পড়ে দেখার মত শক্তি নেই আর বলাকার। সমীরণ তো আছে পাশে - ও বুঝে নিক সব। সই করে ছেড়ে দিল শুধু। কেবিনে ঢোকার ঠিক আগের মুহূর্তে সমীরণের উষ্ণ হাত বলাকার তিরতির করে কাঁপতে থাকা হাতটা ধরে ঠান্ডা গলায় বলল
-'বলাকা আমরা এই বেবিকে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তোমাকে আগে বললে তুমি মানতে না। দাদার আগেই দুটো মেয়ে আছে। আমার বাবা মা চাননা আমাদেরও মেয়ে হোক। বংশ রক্ষার তাগিদেই শুধু এই সিদ্ধান্ত! তুমি দয়া করে আমাকে ভুল বুঝো না! আমি বলতেই পারতাম বেবি অ্যাবনর্মাল! কিন্তু তোমাকে অন্ধকারে রাখতে চাইনা।'
কোন কোন ঘটনার অভিঘাত এতই নি:শব্দ-প্রবল হয় যে কিছুক্ষণের জন্য মানুষের বোঝার বলার চলার শক্তিকে সহজেই হরণ করে নিতে পারে। অভিশপ্ত অহল্যার মতই পাথর হয়ে গেল বলাকা। মস্তিস্কের কয়েকটা কোষ ওকে প্রতিবাদ করার বারুদ জুগিয়ে যাবার চেষ্টা করে চলেছে - অনুরণিত হচ্ছে মাথায় "এর চেয়ে বেশি অন্ধকারে আর কিইবা রাখতে পারত সমীরণ তোকে"! কিন্তু মন আর শরীর যন্ত্রবৎ আচরণ করছে - রিমোট সমীরণ আর নতুন ডাক্তারের হাতে।
অবসন্ন চিন্তার জাল ছিন্ন করে মেট্রো স্টেশনে স্বল্প সিগন্যালেও ফোনটা বেজে উঠল। রুনা - বলাকার কলিগ।
-'কি রে কোথায় তুই? তোর ক্লাসের বাচ্চাগুলোকে আর চুপ রাখা যাচ্ছেনা তো! নিজের ক্লাস ছেড়ে বারবার আসা যায় এভাবে? মেট্রোয় প্রবলেম নাকি?' কোন দূর থেকে যেন ভেসে আসে কথাগুলো।
-'আমি আজ আসছি নারে। শরীরটা বড্ড খারাপ! স্যরি আগেই ফোন করা উচিৎ ছিল। স্-স্যরি!' বলেই কেটে দিল বলাকা। আজকের দিনটা সে শুধুই নিজের সাথে কাটাবে। যে কষ্টটাকে গত আড়াই মাস ধরে রোজ বুকের মাটির ভিতর একটু একটু করে ঠেলে ঢুকিয়ে দিত আজ তাকে খুঁড়ে বার করবে। সেই কষ্টটা আজ অনেকদিন পরে দুটো কচি হাতে তার গলা জড়িয়ে ধরবে - বন্ধনটা একটু একটু করে দৃঢ় হবে - আরও আরও চাপ দেবে তার কন্ঠনালীতে - রুদ্ধ করে দেবে তার শ্বাস - নিজের সাথে টেনে নিয়ে যাবে তার না দেখতে পাওয়া ছোট্ট দুনিয়ায় যেখানে বলাকা ছোট্ট দলা পাকানো কষ্টটাকে পরম মমতায় রক্ষা করবে সমস্ত বিপদ থেকে! 
একপা একপা করে এগোয় বলাকা! হাতে লাড্ডুটা ধরা। পরের মেট্রোটা তীব্র আলো আর বেগ নিয়ে ছুটে আসছে তারই দিকে! 

(৩)
ক্লাস শেষ হতে না হতেই ফোন বাজতে থাকে
-'কি রে কত দেরি? অনেক রাত হয়ে গেল তো!'
-'হয়ে গেছে মা! সবে রাত আটটা বাজে! এত চিন্তা করার কোন কারণ নেই মা! রাখছি।' এবার মা টেনশন আর রাগের মিশেলে একগাদা ইমোশনাল কথা বলবে। তাড়াতাড়ি ফোন কেটে পা চালায় বলাকা। স্কুলের চাকরির পর একটি এন.জি.ও তেও পড়াবার ভার নিয়েছে বলাকা। নিজের জীবনটাকে আস্তে আস্তে আবার সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। মায়ের চিন্তার কারণও বলাকা নিজেই মাকে দিয়েছে। সেদিন মেট্রো স্টেশনের ওই অবসাদী সিদ্ধান্ত তার জীবনটাকে শেষ করে দিতে পারত -- কিন্তু সব ওলোটপালট করে দিল একজনের উপস্থিতি।
একপা একপা করে সে যখন কি এক অমোঘ টানে এগিয়ে চলেছে ছুটন্ত আলোর দিকে পিছন থেকে তার হাতটা শক্ত করে টেনে ধরলেন এক ফরিস্তা! ঘোর লাগা চোখে তাকে চেনা চেনা ঠেকলেও চিনে ওঠার আগেই বলাকা এলিয়ে পড়ে তার বুকে। জ্ঞান হতে দেখে তাকে ঘিরে একটা ছোট ভিড় জমেছে। পাশে বসে মানুষটি তার চোখেমুখে জল ছিটোচ্ছেন , গাল ধরে নাড়া দিচ্ছেন। জ্ঞান ফিরতেই একটা স্বস্তির বাতাবরণ চারিদিকে। ভিড় পাতলা হতে থাকল। মানুষটি সকলকে ধন্যবাদান্তে জানাচ্ছেন উনি মেয়েটিকে চেনেন - আর কোন সমস্যা নেই! অপলকে তাকিয়ে থাকে বলাকা ওই শান্ত কঠিন মুখটার দিকে।
-'এখান থেকে বেরিয়ে কথা বলি?' অনুমতির অপেক্ষা না করেই অতি যত্নে বলাকাকে মেট্রো স্টেশনের বাইরে আনেন উনি। কাছেই একটা স্ন্যাকস অ্যান্ড ফ্রুট জুসের দোকানে বসে ওরা। টুকটাক অর্ডার দিয়ে উনি আবার কথা শুরু করেন 
-'তোমার মেয়েকে আমি বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। আজকে বুঝতে পারছি তুমি পারোনি। তাবলে নিজেকে শেষ করে দিতে হবে?' বলাকার মাথায় হাত রাখলেন সুপ্রিয়া।
বলাকা প্রথমটা চমকে ওঠে। তারপর আস্তে আস্তে মনে পড়ে প্যাথোলজি ল্যাবের ম্যাডামকে। কান্নায় ভেঙে পড়ে সে। সেদিন সুপ্রিয়া মি: বাসু আর অ্যাডভোকেট চ্যাটার্জীর কথা সবটা জানাল বলাকাকে । দুজনে আরও কত কথা হল - কত শোকের আদান প্রদান - যেন জন্ম-জন্মান্তর ধরে তারা বিনি সুতোর মালায় গাঁথা! সুপ্রিয়ার ওই চাকরিটা গেছে।প্রেটোরিয়া স্ট্রীটের একটি নামী হসপিটালের সাথে এখন তিনি যুক্ত। সাথে সাথে বল্লরী নামের এক এন.জি.ও এর সাথে উনি বিশেষভাবে জড়িত। সুপ্রিয়াদিই তাকে বল্লরীতে পড়ানোর কথা ভেবে দেখতে বলেন।
সেদিনটা বলাকা তার শ্বশুরবাড়িতে ফিরেছিল। একদম স্বাভাবিক আচরণে রাতটা কাটায় আর নিজের সমস্ত ডিগ্রি সার্টিফিকেট, মেডিকেল রিপোর্ট আর টুকিটাকি গয়না ব্যাগে গুছিয়ে নেয়। পরের দিনই অ্যাডভোকেট সমীরণ চ্যাটার্জীর বাড়ি ছেড়ে মায়ের কাছে চলে আসে। মা, সুপ্রিয়াদি আর বল্লরীর এক উকিল বন্ধুর সহায়তায় ডিভোর্স কেসও ফাইল করে সমীরণের বিরুদ্ধে। হতচকিত সমীরণ আর তার বাবা-মা-দাদা প্রথমটা চোখ রাঙালেও সমাজে বদনামের ভয়ে পিছিয়ে আসে। শুধু একটাই আফসোস বলাকার এই রুখে দাঁড়ানোর শক্তি যদি সে কমাস আগে পেত!
-'অনেক রাত হল! আপনাকে এগিয়ে দেব একটু?' বর্তমানে ফেরে বলাকা। মায়ের চিন্তা যেন সাগ্নিকের মনে সঞ্চারিত হয়েছে। সাগ্নিকও পেশায় শিক্ষক। স্কুলের পর বল্লরীর একনিষ্ঠ কর্মীও। মানা করেনা বলাকা। রাতের অন্ধকার তার গালের কিঞ্চিৎ রক্তরাগের আনাগোনা লুকিয়ে ফেলে। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাগ্নিকের বিবাহ প্রস্তাবকে সম্মান জানাবে - তবে সাগ্নিককে এখনো জানায়নি কিছু। মৃদু স্বরে গল্প করতে করতে পায়ে পায়ে এগিয়ে চলে ভবিষ্যতের এক সুন্দর স্বপ্ন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন