মনন+অন্তর
********************
আমার বুকের উপর এক পৃথিবী
মন্বন্তর লিখেছিলে তুমি
হাড় হা ভাতে মানুষ গুলোর খিদের জ্বালা
কচুশাক দিয়ে খুদ সিদ্ধ
তার উপর হামলে পড়ার
রাক্ষুসে তাড়না
সবটা লিখেছিলে পরম যত্নে
খাবার চাই, খাবার চাই স্লোগানে
ভরিয়েছিলে আমার অন্তঃসলিলা ফল্গু প্রেম
যৌবনমতি মন যখন সোহাগ পাগল
হাসিমুখে বলেছিলে
' চাতকের মতো হতে নেই আদুরী, তেষ্টা পেলে
ডোবার জলও অমৃত'
অনভ্যস্ত চঞ্চুতে পাঁক দেখালো মন্বন্তর
হায় জীবন, এক লহমায়
প্রেমিক থেকে পুরুষ করলো তোমাকেও।
অহল্যা হলাম আমি,
এখন বিকেলের পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে
সন্ধ্যে নামে আমার পাথুরে শহরে
নিয়নেরা হৈ চৈ ফেলে আমার যৌবন বুকে
তাদের আলোয় স্বপ্নময়ী হয়ে উঠি আমি
সব চলে... কিছুটা নিয়ম মেনে
কিছু অনিয়মে
এখন যখন হৃদপিণ্ডের লাব-ডাব কে
তুমি জীবনের স্পন্দন বলো
আমি তখন তাকে বলি
জীবিত রাখার নিমিত্তে
যন্ত্রের কর্তব্য মাত্ৰ,
ভালো থেকো আমার মন্বন্তর ।
আমি ও নদী
******************
পরশপাথর ঘষে সোনা হতে
চেয়েছিলাম
তুমি শুনিয়েছিলে রাধা উপাখ্যান
বৃন্দাবন, কদমগাছ, রাসলীলা
তোমাকে গোঁসাই বলিনি কখনো
নিজে বোষ্টমী হয়েছি প্রতিবার
একতারার বুকে বেঁধেছি
' প্রেমিকা মন'
তুমি বলেছিলে.....
"জীবন কে বহিয়ে দিতে হয় আদুরী"
কথামত ' জলবৎ তরলম'হলাম আমি
এখন নদী বলে ডাকো আমাকে
ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, নৌকা, মাঝি
ভাটিয়ালি গান, ভেসে যাওয়া শ্যাওলা স্মৃতি
আমার বুকে বাসা বাঁধে রোজ
উপহারে পাহাড় পাইনি কখনো
বরং পাড় ভেঙে অভিশাপ
কুড়িয়েছি রোজ
তবুও এখন ভেসে চলাই আমার জীবন
নদী কখনো থিতু হয় না
তাই প্রেমিক সোহাগে ব্রাত্য সে
নদী কখনো থিতু হয় না
তাই তুমিও এখন
বিরহী বলো নিজেকে
নদী কখনো থিতু হয়না
কারণ তার চলার পথে
পূর্ণচ্ছেদ থাকে না কখনো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন