(১)
বাঁধ ভেঙে দাও
—————-
সদ্য শীতে, লেপ কম্বল রোদে দেওয়া
কতটা নিপুণ, পরিপাটি হয়
মা তুমি জানো এই কারুকাজ
পশমের গোলার মতো নিজে কে ফুরিয়ে
সংসারে নক্শা তোলার কৌশল
পঞ্চব্যঞ্জনে পরিতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে
ভাতঘুমে নিঃঝুম রান্নাঘর ,
কালিমাখা দেয়াল সাক্ষী ,তোমার দুমুঠো ভাতের
পরিশ্রান্ত গল্প… অভিযোগহীন আজও
মানিয়ে নেওয়ার সংবিধান তুমি গুলে খেয়েছো মা !
তোমার ইছামতী শুকিয়ে গেলো
সংসারের বিধানে… সবকিছু যে তোমায় মানায় না
আর কতোদিন মা !
কতোদিন নিজস্ব ভালো লাগাগুলোর
ফসিল বানিয়ে রাখবে…
এখন পড়ন্তবেলায় ছিনিয়ে নাও তোমার নিজস্বতা
মা নিয়ে নাও তোমার একবুক ইছামতী
যা এতদিন আটকে রেখেছে সংসার… নিষেধের বাঁধে
,
২)
আদরের আশ্রয়
———————
খুচরো থাকতো বাঁধা আঁচলের খুঁটে
খরচ বাঁচিয়ে কিছু সংসারী গল্প
হাতপাতা আবদার নিত চেটেপুটে
যদিও চাহিদা ছিল নিতান্তই অল্প
অভাবের ছায়া তুমি রাখতে আড়ালে
গিলে নিতে কৌশলে না পাবার দুঃখ
লক্ষ্মীর ঝাঁপি জানে তুমি হাত বাড়ালে
ছোঁয়াচে সে মোহরের ,বোধটাই সুক্ষ্ম
তোমার পোষ্য ছিল ,জিন না আলাদিন
চুরমুর হজমির আনা পয়সারা !
ম্যাজিক লাঠিতে তুমি করতে রঙীন
সম্বল কি ছিল ! শৈশবটুকু ছাড়া !
হাক্লান্ত ঘরে ফিরে আদরের আশ্রয়
সে উপচানো গন্ধের মা মা সুখটান
পোড়োবাড়ি ধ্বংসের স্তুপ আজ ভয়
হেরো রাত খোঁজে ঘুমপাড়ানির গান
৩)
পরমান্ন
———
বসন্ত এলেই আমি পায়েসের গন্ধ পাই
জানলায় মা এসে দাঁড়ায়…
আয়ুরেখা , শেষ সীমার দিকে
এগিয়ে যায় কিছু টা ,
দমকা হাওয়ায় কাঁপতে থাকে প্রদীপের শিখা
মা আসবে বলে,
ঘষে মেজে চকচকে করি পেতলের পিলসুজ ;
আকাশে ফাগুনী পূর্ণিমার চাঁদ উঠলে,
মা আসে…
হাতের বাটিতে সাদা পরমান্ন
চাঁদের আলো পিছলে যায়
কেঁপে ওঠা প্রদীপের শিখা
আঁচলে আড়াল করে মা…
আমি শৈশবের ফানুসে ভেসে ভেসে
আবদারের আশ্রয়ের চৌকাঠ পেরোই
পায়েসের গন্ধ নিই বুকভরে…
খুবই ভালো লাগল
উত্তরমুছুন