শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১

জবা ভট্টাচার্য

                    


          অধিকার

গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ! ভোট দিতে এসেছিলো
  এ কোন গণতন্ত্র? রক্তে পথ  ভিজে গেল?

  রক্ত  ধুয়ে ফেললেই কি সব মোছা যায়?
  অনির্বাণ আগুন জ্বলে পথের গুল্মলতায়।

  "ও রাজা তোর কাপড় কোথায়",লজ্জা কোথায় রাখিস?
  দিকে দিকের জনরোষ দেখব কিসে ঢাকিস ।

  চিতার আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে, ভাবিস যুদ্ধ  শেষ!
  সব পোড়ায় না চিতা,নাভিকুন্ড জাগে অনিঃশেষ।

  ওরা তো ফিনিক্স, দাঙ্গাশিবিরে যদি বা পোড়ে লাশ
  অস্ত্র হাতে জাগবে আবার  রুখতে সন্ত্রাস।#

      পারিজাত

  মেয়েমানুষ হয়ে জন্মেছিলি
  ছাপোষা বিছানায়
  কি পেলি রে জীবনভর মেয়ে?
  বয়ে গেলি শুধু দায়।

  গর্ভঘুম ভেঙে উঠলি যখন
  দেখলি সমাজ ছেলেই চায়
  ছেলেই তো সমাজ ,সংসার, বংশ রক্ষক
  মেয়ে আলোকসামান্যা মানবী তো নয় ।

  বাপের ঘরে বাবার পদবী, স্বামী ঘরে তার
  পুরুষ ই তোর ভাগ্য গড়ে,
  ভুলেও কখনও স্বাধিকার গড়তে গেলে
  ঘর জুড়ে তোর পোড়া ছাই ওড়ে।

  তবুও বারেবারে, সবুজ ঘাসের মতো
  ভালোবাসার  টানে
  আকাশচুম্বিত পুরুষ আঁকিস আনমনে
  অলীক  সম্মোহনে ।

  ভেঙে ফেল এবার,আছে যা অন্দরে বন্দী
  কাঁটাতারের  ঘেরে
  কিল খেয়ে কিল হজম করিস না রে মেয়ে
  মরিস না বেঘোরে।

  মীরা নয় , তুই  রাধাই  হবি
  মুরারী আকাশনীলে
  প্রভুত্ব নয়, তপস্যা হবি পুরুষের
  ভালোবাসার অন্তমিলে।

   বিদাহী সময়

   চোখের থেকে কালো চশমাটা সরাও---
   নির্বাসন দাও শকুনি, দুঃশাসনের কালো---
   " অশ্বথামা হত ইতি গজ"র মুখোশটা
   সরাও মুখের থেকে------
   নইলে অন্ধতাপ ক্রমশ স্পষ্ট হবে নিঃসঙ্গ স্পর্শে।

   অথচ দেখো তুমি, দিকচিহ্ন নির্দেশ করে আজও
   গান গেয়ে যায় অন্ধ বাউল----

   দীর্ঘতা ছুঁয়ে উড়ে যায় পাখি-----

   এখনও বুকের  ভেতর কনীনিকা, সন্তানের
   জন্মের প্রস্তুতিপাঠ লিখে রাখে সযত্নে।

   সময় এসেছে, চোখের থেকে কালো চশমাটা সরাও
   মুখের থেকে মুখোস।। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন