রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১

পিয়াংকী

                                                   



 লিখতে লিখতে আজ গরম বাহারের দশম পর্ব চলে এলো। বিগত ন'সপ্তাহ আপনারা যেভাবে একটু একটু করে আমার হাতাখুন্তি আর কলম ক্যামেরাকে ভালবেসে নিয়েছেন,সেটুকুই প্রাপ্তি। কোনদিন ভাবিনি রান্না নিয়ে কিছু লিখব,অথচ এখন প্রতি রবিবার চেয়ে থাকি । আপনাদের ভাললাগা যখন শেয়ার করেন, মন ভরে যায় আনন্দে। 


আজ আরও একটা প্রপার লাঞ্চ থালা সাজাব।সেখানে থাকবে 

ভেজিটেবল স্টাফড রুটি

 আদুরেপনির 

ঘরে বানানো টকদই 


এই থালায় প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট মিনারেল ফ্যাট সবকিছু থাকবে।আসলে সঠিক মাত্রায় শরীরে এগুলো থাকা খুব জরুরি। 


রুটির আটা সামান্য নুন আর কুসুম-গরম জল দিয়ে মেখে রেখে দিন আধ ঘন্টা। পুরের জন্য ননস্টিক প্যানে রসুনকুচি হালকা সেঁকা টাইপ করে নিয়ে তাতে মিহি করে কুচোনো পেঁয়াজ আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে আরও মিনিট তিনেক হাল্কা নাড়াচাড়া করুন,যতক্ষণ না কাঁচা গন্ধ চলে যায়। তারপর ওতে দিন আগে থেকে গ্রেট করা নুন মাখানো (জল চেপে ফেলে দিয়ে)  গাজর বিন ব্রকোলি ক্যাপসিকাম, গ্যাসের আঁচ কমিয়ে ঢাকা।মাঝে মাঝে শুধু নেড়ে দিতে হবে।কারণ তেল নেই ফলে নীচে লেগে যাবার সম্ভবনা প্রবল। মিনিট দশেক পর ঢাকা খুলে দেখুন কী সুন্দর ভর্তা টাইপ মাখোমাখো হয়ে গেছে।এবার ঠান্ডা করে পুর ভরে বেলে নিয়ে তাওয়াতে সেঁকলেই তৈরি ভেজরুটি।তবে হ্যাঁ এই স্টাফড রুটিগুলো যেহেতু ডিরেক্ট আগুনে ফেলে সেঁকা যায় না তাই তাওয়াতেই একটু সময় নিয়ে চেপে চেপে ভাজতে হবে।একেকটা রুটি ভাজতে কিন্তু মিনিট তিনেক সময় লাগে

            


এবার পনির। প্রথমেই বলব পনির টুকরো করে নিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রাখুন।রান্নার পাঁচ মিনিট আগে বের করবেন। একটা ননস্টিক প্যান খুব ভালো করে গরম করে তাতে পনির টুকরোগুলো এপিঠ ওপিঠ  সেঁকে নিয়ে গরম জলে ভিজিয়ে দিয়ে সরিয়ে রাখুন কিছুক্ষণের জন্য। ওই প্যানেই সামান্যতম বাটার বা অলিভ অয়েল ব্রাশ করে একে একে রসুনকুচি ডুমো করা কাটা পেঁয়াজ আর ক্যাপসিকাম   দিয়ে অল্প তাপে ওদের সাতলাতে থাকুন।আসলে কী জানেন তো আজকের এই স্যতে করাই ঠাকুমার আমলের সাতলানো।  যাই হোক, প্রসঙ্গে ফিরি।পরিমাণ মত সাদা তিল রোস্ট করে বেটে রাখুন।মিনিট পাঁচেক পর স্যতে হওয়া  সবকিছু নরম আর ল্যাটপ্যাটে হয়ে এলে সামান্য দুধে কর্ন ফ্লাওয়ার গুলে তিলবাটা মিশিয়ে ঢেলে দিন,সাথে দিন রোস্টেড কারিপাতা আর কসৌরিমেথি। অল্প করে গোলমরিচগুঁড়া ছড়িয়ে দিন। রেডি হেলদি আদুরেপনির।



পরিবেশন করুন ঘরে পাতা টকদই আর শশা দিয়ে।



এই প্রসঙ্গে বলে রাখি,এই ধরণের ডিশ নিজেকে বা প্রিয়জন কাওকে সার্ভ করার আগে সাজানোটা মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট। 


যেমন ধরুন, রুটির লেচি ছোট করে কেটে নিয়ে বেললেন বড় করে।যখন খাবেন তখন আপনার মন বলবে অনেকটা খাচ্ছি, আদতে আপনি খাচ্ছেন কিন্তু অল্প সীমিত।

     


আবার ধরুন, পনির বা তার গ্রেভি  যদি একটা ছোট বাটিতে সার্ভ করেন তাহলে বাটিটা একদম ভর্তি উঁচু উঁচু দেখাবে। যিনি খাবেন তিনি মেন্টালি স্যাটিসফায়েড হবেন এটা দেখে যে 'পরিপূর্ণ বাটি খাচ্ছি '।

       


এসকল কিছু বলতে পারছি এইজন্যই কারণ মেয়ের ক্ষেত্রে অ্যাপ্লাই করেছি, একসময় খাওয়া নিয়ে ডিপ্রেশড থাকা মেয়ে আজকের ডেটে দাঁড়িয়ে এইরকমভাবে নিজে সার্ভ করে অন্যান্য মানুষের জন্য এবং সে নিজের ওজন একাশি থেকে চৌষট্টিতে নামিয়েছে,শুধুমাত্র পরিমিত খেয়ে

 


আসলে সেই আদিকাল থেকে আজ অব্ধি যদি খাদ্যবিবরণী একটু ঘাঁটাঘাঁটি করি তাহলে দেখব সর্বকালেই ডায়েট চার্ট এর আসল অর্থ পরিমিত এবং  যথার্থ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্যগ্রহণ।  সুস্থ সুন্দর বেঁচে থাকার দীর্ঘায়ু হবার প্রথম আর প্রধান শর্ত এটিই 


যেহেতু এই লাঞ্চবক্স বাঙালির তেলালোঝোলালো পঞ্চব্যঞ্জন নয়, ফলতঃ একটু সুদর্শন যুবক বা আকর্ষণীয় যুবতীর মত করে তুললে মন নেচে ওঠে।যে কোনো বিষয়ে  সুন্দরের টান কে ই বা কবে ফেরাতে পেরেছে!প্রবাদেই তো আছে  'পেহেলে দর্শনধারী বাদ মে গুণবিচারী'



২টি মন্তব্য: