ডিটক্স ওয়াটার বা ইনফিউসড ওয়াটার, এখন এটা ট্রেন্ড । কিন্তু এই ট্রেন্ড ফলো করার আগে জানা দরকার ডিটক্সিফিকেশন কি।আমরা কথায় কথায় বলি শরীরটা চলছে না আর, মেশিনে তেল নেই।হ্যাঁ শরীর একটা যন্ত্র। বাহ্যিকভাবে চুল চামড়া ধুয়ে তাকে পরিস্কার করা হয় কিন্তু ভেতর? তাকে সাবান মাখানো স্নান করানো হবে কিভাবে বলুন তো?
হ্যাঁ ভেতরঘর পরিস্কার রাখার প্রসেসই হল ডিটক্সিফিকেশন। যা কিনা দেহের টক্সিন রিলিজ করিয়ে দিয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়িয়ে সমস্ত কোষকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে। সবচেয়ে বড় ভূমিকা হল আমাদের শরীরের বি.এম.আর অর্থাৎ বেসিক মেটাবলিক রেট বাড়িয়ে ক্যালোরি বার্ণ করতে সাহায্য করে। আমাকে আমার ডায়েটিশিয়ান বলেছিলেন, "এই যে আমরা কথায় কথায় বলি অমুক হাওয়া খেয়েও ফুলছে আর তমুক সারাদিন বিরিয়ানি আর হালিম খেয়েও ফুলছে না, আসলে এটা কাজ করছে আপনার জন্মগত বি এম আর এর রেটের ওপর। যার বি এম আর যত হাই সে তত কম ওজনের মানুষ। আর যার বি এম আর যত লো সে তত বেশি ওজন ক্যারি করছেন সুতরাং ওজন কমানোর উপায় বলতে গেলে প্রথমেই বি এম আর বাড়ানোর দিকে মন দিন"। আজ আমি দুটো ডিটক্স ওয়াটারের এবং আট রকম ডিটক্স চায়ের কথা বলব। আমি যতটুকু করে উপকার পেয়েছি ততটুকুই জানাব আজ।যদিও গরম বাহার রান্নার ব্লগ তবু শরীর সুস্থ রাখতে গেলে একটু তো করতেই হয়
হোলনাইটওয়াটার...খোসা সমেত একটা শশা গোল চাক চাক করে কেটে নিন,সাথে দশ বারোটা পুদিনা পাতা পাঁচটা কারিপাতা, গোল চাক করে কাটা পাতিলেবু কয়েকটা তুলসীপাতা এক লিটার জলে ভিজিয়ে রাখুন সারারাত।সকালে উঠে নির্ভাবনায় খেতে থাকুন,দারুণ ফ্লেভার। আর দারুণ টক্সিন রিলিজিং।ত্বক ঝলমলে রোদ্দুর হতে বেশি দেরি লাগবে না
হোলনাইট ওয়াটার
শুদ্ধগরমজল...দেড়শো মিললিটার ঈষদুষ্ণ গরম জল সকালে এবং রাতে শোবার সময় (খালি পেটে) খেলে ম্যাজিকের মত কাজ করবে।জল ক্যালরিহীন একটি পানীয়
শুদ্ধ গরমজল
এবার আসি চা-য়ে🙂
গ্রীনটি...ভরপুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ বর্তমান পৃথিবীর বুকে স্বাস্থ্যসচেতন প্রতিটি মানুষের দিন শুরু হয় গ্রীনটি দিয়ে।এক কাপ জল ফুটিয়ে নিয়ে একটা টিব্যাগ ঝুলিয়ে চলে যান গাছে জল দিতে।ফিরে এসে বসে পড়ুন সামনের বারান্দায়। পাখি দেখুন গাছের সবুজের দিকে তাকান আর মুখে দিন সবুজচা। একটানা একুশ দিন করে দেখুন আপনার বডি একে আপন করতে শুরু করবে সাথে বেলি ফ্যাট কমবে আর স্কিন তরুণ তরুণী হতে থাকবে
গ্রীণ টি
দারচিনিচা...তৈরি পদ্ধতি খুব সহজ, এক থেকে দেড় ইঞ্চির দুটো স্টিক নিয়ে দেড়শ থেকে দু'শ মিলিলিটার জলে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে গরম গরম খেতে হবে, বেশ খানিকটা সময় ধরে।
দারুচিনি চা
আদাজল...আদার মধ্যে থাকা উপাদান প্রাচীন যুগ থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে ইনফেকশনের প্রতিরোধী হিসেবে।আদা মেটাবলিজম বিপাকক্রিয়ার হার বাড়িয়ে শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে। তিন লিটার জলে তিরিশ থেকে চল্লিশ গ্রাম আদা থেঁতো করে বা গ্রেটারে গ্রেট করে ফুটিয়ে নিন মিনিট পনের সময় ধরে।একগ্লাস গরম গরম খান। তারপর সারাদিনের জলে একটু একটু করে মিশিয়ে খান।সর্দিকাশি থেকে ত্বকের সমস্যা সবেতেই কার্যকরী এই জল
জিরালেবুচা...চা চামচের এক চামচ জিরা আগের দিন রাতে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে সেটা ফুটিয়ে তার মধ্যে একটা গোটা পাতিলেবুর রস,কিছুটা পুদিনা পাতা দিয়ে গরম থাকতে থাকতে সিপ সিপ করে টানুন।পেটের ফ্যাট কমাতে এই চায়ের জুড়ি মেলা ভার
জিরালেবু চা
চিয়াসিডওয়াটার... একেক সময় একেকটা জিনিসের ঝোঁক দেখা যায় ইয়াং জেনারেশনের মধ্যে।সেরকমই হল এই চিয়াসিড। এর গুণাগুণ বললে শেষ করা মুশকিল। আগের দিন রাতে চা চামচের দুই চামচ ভিজিয়ে রাখুন পরেরদিন সকালে সেই জলটা গরম করুন।বাবলস এলে নামিয়ে নিন।একটু পিচ্ছিল স্বাদ গন্ধ কিছুই নেই।তবে খেলে ওজন কমবে তাড়াতাড়ি। পনের দিন খেয়ে পরের পনের দিন অন্য ডিটক্স খান।
চিয়াসিড
আনারসিখোলাচা...এই বর্ষা ঋতুতে আমরা খুব আনারস খাই আর তার খোসা বুকসমেত ফেলে দিই,অথচ জানিই না যে এই খোসায় কী অসাধারণ গুণ আছে।খুব ছোট ছোট পিস করে খোসাগুলোকে কেটে পাঁচশো মিলিলিটার জলে অন্ততপক্ষে কুড়ি মিনিট ফোটান যতক্ষণ না জলের পরিমাণ অর্ধেক হয়ে যায়।ছেঁকে নিয়ে খান খুব আয়েশ করে
আনারসিখোলা চা
কমলাটি...ডিটক্স হিসেবে আমার সর্বাপেক্ষা পছন্দ হল এই চা।কমলালেবুর চোকলা মানে খোসা ভালো করে ধুয়ে জলে ফুটিয়ে নিলেই তৈরি আপনার অরেঞ্জটি।সাথে আপনি দুটো গোটা গোলমরিচও ফুটিয়ে নিতে পারেন। শীতকালে ঝুলবারান্দায় বসে আয়েস করে ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করতে করতে খেয়েই দেখুন না
কমলাটি বা অরেঞ্জটি
ভীষণ ভীষণ উপকারী পোস্ট। গরমবাহারকে ধন্যবাদ এরকম উপযোগী ব্লগ প্রকাশ করার জন্য। রান্নার পাতার প্রধানকে আমার শ্রদ্ধামিশ্রিত ভালোবাসা।
উত্তরমুছুনদারুন۔۔ পোস্ট ۔۔۔
উত্তরমুছুন