রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১

পিয়াংকী

                             





Zero oil technique... আজকের রান্নাবাটি খেলায়


গরমবাহার শুরু করেছি প্রায় দু'মাস হতে চলল। ভেতো বাঙালির তেলালোঝোলালো রান্নাবান্না করলাম অনেক। আজ ইচ্ছে হল একটা প্রপার ডায়েট লাঞ্চ ডিশ শেয়ার করি।যেখানে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট মিনারেল ফ্যাট পরিমিত এবং সঠিক মাত্রায় থাকবে। 



   আজ রান্না করব Zero oil technique ফলো করে। গুগল বা ইউটিউব সার্চ করে আপনারাও খুব সহজে শিখে নিতে পারবেন এই প্রসেস। এই সিস্টেমে রান্না করার প্রধান এবং একমাত্র শর্ত হল ক্যালোরিবিহীন জলকে তেলের মত ব্যবহার করার শিক্ষা।প্রথমদিকে আমিও পারতাম না তারপর... 

সেই একটা বাক্য আছে না practice makes a man perfect 

যাই হোক আলোচনাতে ফিরি।আজ করব ভেজিটেবল স্টাফড পারাঠা

এগ নারিশিং

হাংগকার্ড



মাল্টিগ্রেন আটা নিলাম।আপনারা সাধারণ গমের আটাও নিতে পারেন।অল্প নুন আর কুসুমগরম জল(আঙুল ডোবান যাবে এমন তাপমাত্রার জল) নিয়ে সেটা মেখে ভেজা একটি কিচেন টাওয়াল দিয়ে ঢেকে পাশে রেখে দিলাম ।এবার স্টাফিং তৈরীর পালা। বিন গাজর ক্যাপসিকাম গ্রেটারে গ্রেট করে নুন আর এক পিঞ্চ হলুদ দিয়ে মেখে রাখতে হবে কিছুক্ষণ যাতে নরম হয়ে যায়।একটা ননস্টিক প্যান আভেনে বসিয়ে খুব ভালভাবে গরম করে সেখানে বেশি করে রসুন কিমা দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে, এরপর মিহি করে কুচো পেঁয়াজ দিয়ে আবার নাড়ানো (গ্যাস কমিয়ে) যাতে পেঁয়াজ রসুনের কাঁচা গন্ধ চলে যায়। এরপরে গ্রেটেড ভেজিটেবল দিয়ে সাথে কাঁচালঙ্কা কুচি দিয়ে চাপা ঢাকা। মিনিট পাঁচেক পর ঢাকা খুললে দেখব জল বেরিয়েছে এবং সেই জলে খানিক সেদ্ধও হয়ে গেছে সবজিগুলো। এখন গ্যাসের তাপ বাড়িয়ে জল মারানোর পালা। ক্রমাগত রান্না করতে করতে একটা মন্ড টাইপ তৈরি হয়ে যাবে, দেখতে লাগবে অনেকটা বাঙালির কচুবাটার মত।জানি হাত ধরে যায় কন্টিনিউয়াস নাড়তে নাড়তে।কিন্তু হেলদি খাবার খেয়ে স্লিম এন্ড ট্রিম থাকতে গেলে তো এটুকু একটু করতেই হবে🙂।স্টাফিং রেডি হয়ে গেল।


    ভেজস্টাফিং

এবার চলে যাব এগ নারিশিং এর দিকে।নরমালি আমরা ডায়েটে থাকলে ডিমের কুসুম অ্যাভয়েড করি। কিন্তু আজ আমি whole egg ইউস করব।এর জন্য ননস্টিক প্যান নিয়ে একটা ডিম ফাটিয়ে দিয়ে, তার ওপর সামান্য নুন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে এক মিনিট ঢেকে পোচ তৈরি করে নিতে হবে। এক মিনিট পর একটা কাঠের খুন্তি ব্যবহার করে পোচটা উলটে সেঁকে নিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। ওই প্যানেই কুচোনো রসুন আদা দিয়ে টস করে নিয়ে স্কোয়ার করে কাটা পেঁয়াজ ক্যাপসিকাম দিয়ে তাতে পরিমাণ মত নুন দিয়ে সমানতালে নেড়ে রান্না হতে দিতে হবে অন্তত আট দশ মিনিট। নির্দিষ্ট সময় পর ঢাকা খুলে সেখানে দেব একটা মিশ্রণ। ফেটিয়ে রাখা টকদই সামান্য কাশ্মিরী লাল লংকা গুঁড়ো আর সামান্য কর্নফ্লাওয়ার সাথে এক চাচামচ করে টমেটোসস আর সয়াসস মেশালেই মিশ্রণ তৈরি। গ্রেভি থকথকে হয়ে এলে ডিমের পোচ।জাস্ট এক মিনিট ঢাকা।পোচের শরীরে মশলা মেখে গেলেই রেডি এগনারিশিং। ওপর থেকে ছড়িয়ে দেব ড্রাই রোস্ট করা কসৌরিমেথি।নামকরণটা আমার আসলে কষিয়ে না খেতে পারলে নামটা কষিয়ে দিতে হয়🙂


এবার পরোটায় আসি।এতক্ষণে আটা জমে গেছে পরোটার জন্য।লেচি কাটব আন্দাজ অনুসারে। স্টাফিং থেকে মন্ড নিয়ে গোল গোল বলের আকারে গড়ে লেচির মধ্যে ঢুকিয়ে বেলে নিতে হবে নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী। আমি তিনকোণা পরোটার চেয়ে রুটির মত দেখতে পছন্দ করি।  বৃত্তকে একটু বেশিই ভালোবেসেছি চিরকাল🙂।আবার ননস্টিক প্যান ভালো করে তাতিয়ে নিয়ে বেলে রাখা পরোটাকে ধপাস করে ফেলে দু'পিঠ সেঁকে এক চামচ পিওর ঘি।আমি ঘি ঘরে তৈরি করি।ঘরে বানানো ঘি হলে ভালো হয়।স্বাস্থ্যকর খাদ্যের আসল হল শুদ্ধতা। একেক বারে তিনটি করে পরোটা ভেজে নেয়া যায় খুব সহজেই।


   উইথআউট ওয়েল


ঘরে পাতা টকদইয়ের কোনো রেসিপি নেই।সবাই জানেন।🙂।সেই দইটুকুই একটা মস্লিন কাপড়ের টুকরোয় ছেঁকে নিলেই হাংগকার্ড। টপিংয়ে গোলমরিচগুঁড়া আর গ্রেটেড আদা দিতে পারেন।তবে টকদই একশ গ্রামের বেশি খাবেন না কিন্তু




টিপস

zero oil theme এর এই একটাই বিষয় নজরে রাখার যে রান্না করতে হয় গ্যাস কমিয়ে সময় নিয়ে।ন্যাচারালি আমরা তেল দিয়ে যখন রান্না করি তখন যা কিছু তা কুক হয় তেলে সেদ্ধ হতে হতে কিন্তু এই পদ্ধতিতে তো তেল নেই ফলে জলে রান্না হতে সবচেয়ে বেশি যেটা লাগে সেটা হল ধৈর্য।


স্বাস্থ্যকর খান।সুস্থ সুন্দর থাকুন।




৪টি মন্তব্য: