রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১

সম্পাদকীয়

            






 আজ বাইশে শ্রাবণ। সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। বাতাসে বিষাদের গন্ধ ।

বেলা ন'টায় দেওয়া হল অক্সিজেন। শেষবারের মতো দেখে গেলেন বিধান রায় ও ললিত বন্দ্যোপাধ্যায়। কানের কাছে অবিরাম পড়া হচ্ছিল তাঁর জীবনের বীজমন্ত্র 'শান্তম, শিবম্, অদ্বৈত্যম'। খুলে দেওয়া হল অক্সিজেনের নল। ধীরে ধীরে কমে এল পায়ের উষ্ণতা, তারপরে একসময়ে থেমে গেল হৃদয়ের স্পন্দন। ঘড়িতে তখন বাজে ১২টা ১০ মিনিট।শেষমুহুর্ত উপস্থিত।জোড়াসাঁকোতে হাজির হাজারে হাজারে মানুষ কবিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে । একদিকে যখন ভেঙ্গে পড়েছেন তাঁর আত্মীয়, বন্ধু, ঘনিষ্ঠরা, তেমনই বাইরে তখন আবেগে উদ্বেল সাধারণ মানুষ। কবিকে কীভাবে শেষযাত্রার জন্য সাজিয়ে দেওয়া হবে সেই নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা ৷ গুরুদেব নিজেও চাননি এইভাবে চলে যেতে। তাঁর শরীর কিছুটা অসুস্থ ছিল অপারেশনের পূর্বে ৷ কিন্তু তারই মধ্যে তিনি করে চলেছিলেন সৃজনশীল কাজ।তাঁর ইচ্ছা ছিল কোনও জয়ধ্বনি ছাড়া সাধারণভাবে শান্তিনিকেতনে প্রকৃতির কোলেই তিনি যেন মিশে যেতে পারেন। তাঁর শেষ ইচ্ছাটা আর রাখা যায়নি। তিনি চলে গেলেন রেখে গেলেন তাঁর  অজস্র কাজ । আমাদের প্রাণের ঠাকুর রবিঠাকুর ৷ তাঁর এই প্রয়াণে আমরা তাঁকে স্মরণ করি কবিতায় ,নাটকে৷ তাঁর রচনায় ফিরে ফিরে এসেছে মৃত্যুচেতনা। মৃত্যুকে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন তা বোঝা যায় তাঁর কবিতায়। আজ তাঁর ৮০ তম প্রয়াণ দিবস। বর্ষার তাঁর প্রিয় ঋতু।আর  এই ঋতুতে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান৷


জানি একদিন সবকিছু ছেড়ে যেতে হবে পৃথিবীর জল ,হাওয়ার সুযোগ খুব  বেশিদিন পাওয়া যাবে না

  চাই কিছু করে যেতে 

 সূর্যের  গোলাকার পথে  

পায়ে পায়ে হেঁটে  যেতে চাই

 কয়েক  আলোকবর্ষ দূরে

যেখানে শুধু আলো আর আলো 

কতটুকুই বা পারি 

তবু জেনো 

এ বৃক্ষের ছায়ার মত আছি 

এই শ্রাবণে তোমাকে খুঁজি 

ঝিরিঝিরি বারিষণে

বর্ষা 

তোমারও প্রিয় ঋতু যে ...



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন