সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সৌমনা দাশগুপ্ত

 


তিমির অবগুণ্ঠনে


ফিসফিস করে এক কলববর্জিত দেহ

#

শরীর কি মাছরাঙা, পোড়া এক বিলাবল ঠাট

পালকের ধারে-ভারে ঝুঁকে পড়া গাছ

#

পাথরযুগের থেকে তিমির রঙের গান

লৌহ আকরের ঘুম ভেঙে যন্ত্রের মর্মর

#

পাতারা এসব ভুলে বারবার ফুটে ওঠে

আকাশের শরীরের তরল সবুজ

 

এ এক পান্থনিবাস, কথা আসে কথা চলে যায়

#

অযথা বিভ্রমে তাকে ভেবে বসি ঘর

আদৌ ঘর ছিল কি দেহের মাঝে

#

দেরাজের ভাঁজে ভাঁজে মৃত টিকটিকি

ভেজা ফসিলের গান, ছায়ার পায়ের দাগ

#

কীটনাশক ছড়িয়ে দিচ্ছি শস্যবিছানায়

পেট্রলে চুবিয়ে রাখি স্বপ্নের হাড়গোড়

#

ঘুম আসে ঘুম নিভে যায়

পাখি আসে পাখি নিভে যায়

 

সাজানো মঞ্চের থেকে একে একে নেমে যায় স্বপ্নেরা

#

তূণীরে যে তির রাখা সে-ও তাক করে তোমাকেই

আভোগে ও সঞ্চারীতে লেগে ছিলার অহংকার

#

তুলে নাও হলাহল

এ-সাগরে পাথর মাছের বিষবমি

গানে ও লবণে তাকে ভাসাও ডোবাও

#

নজরমিনার থেকে যে তোমাকে আঁধার চেনায়

সেই মেঘটির কাছে রাখা আছে আগুন-পাথর

#

তুলে নাও চকমকি, ঘষা লেগে জ্বলছে অক্ষর

 

পায়ের পাতায় শুধু আঙরার দাগ, পারঅক্সাইড-ক্ষত

#

একলা ঈগল ভাসে, ভাসে তার ডানার দ্রাঘিমা

তোমার মুখের ছবি তার মুখে

তোমার ছায়ার শব তারই ছায়ায়

#

এসো ওই ছায়াটির কাছে বসে দু-দণ্ড জিরোই

ঢাকাচাপা দিয়ে রাখি ঘামের প্রপাত

হাওয়ায় পেতেছি ফাঁদ, জানি একদিন ধরা দেবে

ঘুমকুঠুরির থেকে আসবে ঠিকই উড়ে অচিন পাখিটি

#

তুমি তাকে শমন বলেছ, আমি বলি শ্যামরায়

 

ভাষার বাগানে মাছি খুঁটে খায় গহন নির্যাস

#

মাংসের আবরণ খোলো, খুলে রাখো নিভাঁজ অব্যয়

অ-কার ই-কার খুলে শব্দ থেকে বেরিয়ে আসছে

উদোম অক্ষর যত, বোবাগাছে ঝুলছে অক্ষর

#

হাড়িকাঠে নিচুমাথা শুয়ে আছে আমার শব্দেরা




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন