ভরসা যখন "বাংলা"
পুরনো মদে না কি জম্পেশ নেশা হয় ?সম্প্রতি রাজ্য বিধানসভায় একটি পুরানো বিল ( প্লিজ, মদ পড়বেন না ) বর্তমান সরকার সর্বসম্মতিতে নতুন করে বিধানসভায় পাশ করিয়ে নিলেন।যখন বাজারদামের বাড়বাড়ন্ত, বৃষ্টি না খরা,শিল্পের চপ না তেলেভাজা বড়া,না কি সি বি আই ,না কি সারদা- নারদা,না কি বেতন কমিশন,না কি রাজ্যের ঘরে ঘরে বেকার ভাই- বোন বা ভাইপো- ভাইঝি কিংবা পুত্র-কন্যা বাড়ন্ত--- তখন এসব সরিয়ে আবার বেশ মৌতাতে মজেেছে ' বাংলা '।
সকল সরকার বাহাদুরের অসীম ক্ষমতা।আর ক্ষমতা হাতে থাকলেই নাম বদলের খেলা তো বহুত পুরনো। সে সরকার বাম বা রাম বা অন্য যে কোনো সরকারই হোক না কেন !
এরাজ্যের নাম পরিবর্তনে সেই বস্তা পচা যুক্তি তো আছেই । "ওয়েস্ট বেঙ্গল" হলে তালিকার প্রায় শেষ নাম, মহাহুজুরদের ও শ্রোতৃবর্গের ধৈর্য না কি আর রয় না? তাই "প্রাণ ভরিয়ে " আমাদের রাজ্যের সমস্যাবলীর কথা না কি সেভাবে বলা হয়ে ওঠে না ? তাই ,নাম 'বাংলা' হলে বড়ো হুজুরের কাছে সব সমস্যার কথা তুলে ধরে আমাদের ভিক্ষার ঝুলি প্রসারিত করতে আর কোনো বাধা রইলো না।স্বাধীনতার পর থেকে তো আমরা তাই করে চলেছি।ঋণ নিচ্ছি আর ঘি খাচ্ছি ।ঋণ আমাদের অতীত, আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত ।আমাদের ঋণ মেটানোর জন্য ঋণের সুদ দেওয়ার জন্যও ঋণ করতে হয়।এমনকি কর্মচারীদের মাইনে দিতে ঋণ করতে হয়, উন্নয়নকাজ করতে বা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্যও ঋণ করতে হয় । বলতে পারবেন, রাজ্যের স্বনির্ভর অর্থনৈতিক কাঠামো আর কবে গড়ে উঠবে , আম জনতা ? অথচ রাজ্য সরকারকে জনমনোরঞ্জনী কর্মসূচী বাড়িয়েই যেতে হচ্ছে ।ভোট বড়ো গরজ ।তাই সব সরকার একই পথের পথিক ।পাব্লিক কি আর সাধে বলেন ,যে যায় লঙ্কায় ...।দামে বড়ো ঝাল কাঁচায় বা শুকনোয়।
এরাজ্যের নাম পরিবর্তনে সেই বস্তা পচা যুক্তি তো আছেই । "ওয়েস্ট বেঙ্গল" হলে তালিকার প্রায় শেষ নাম, মহাহুজুরদের ও শ্রোতৃবর্গের ধৈর্য না কি আর রয় না? তাই "প্রাণ ভরিয়ে " আমাদের রাজ্যের সমস্যাবলীর কথা না কি সেভাবে বলা হয়ে ওঠে না ? তাই ,নাম 'বাংলা' হলে বড়ো হুজুরের কাছে সব সমস্যার কথা তুলে ধরে আমাদের ভিক্ষার ঝুলি প্রসারিত করতে আর কোনো বাধা রইলো না।স্বাধীনতার পর থেকে তো আমরা তাই করে চলেছি।ঋণ নিচ্ছি আর ঘি খাচ্ছি ।ঋণ আমাদের অতীত, আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত ।আমাদের ঋণ মেটানোর জন্য ঋণের সুদ দেওয়ার জন্যও ঋণ করতে হয়।এমনকি কর্মচারীদের মাইনে দিতে ঋণ করতে হয়, উন্নয়নকাজ করতে বা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্যও ঋণ করতে হয় । বলতে পারবেন, রাজ্যের স্বনির্ভর অর্থনৈতিক কাঠামো আর কবে গড়ে উঠবে , আম জনতা ? অথচ রাজ্য সরকারকে জনমনোরঞ্জনী কর্মসূচী বাড়িয়েই যেতে হচ্ছে ।ভোট বড়ো গরজ ।তাই সব সরকার একই পথের পথিক ।পাব্লিক কি আর সাধে বলেন ,যে যায় লঙ্কায় ...।দামে বড়ো ঝাল কাঁচায় বা শুকনোয়।
নাম নিয়ে নামমাত্র বিতর্ক হয়েছিল । 'বাংলা' না 'বঙ্গ' তাই নিয়ে হয়েছেও কিছু কিছু রঙ্গ । তো বিতর্কে তো আর অঙ্গহানি হয় না বরং মননে শান দেওয়াটা হয়।১৮৯৬ খ্রীস্টাব্দে রচিত " বঙ্গভাষা ও সাহিত্য " গ্রন্থে শ্রদ্ধেয় দীনেশচন্দ্র সেন " বঙ্গ" শব্দটিকেই মর্যাদা দিয়েছেন । আরেকজন শ্রদ্ধেয় মানুষ সুকুমার সেন
"বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস" গ্রন্থের রচয়িতা ।গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪০ খ্রীস্টাব্দে।মোট পাঁচ খণ্ডের এক অনবদ্য গবেষণামূলক কাজ তিনি করে গেছেন । দুজনেই কিন্তু শ্রদ্ধার সঙ্গেই 'বঙ্গ' শব্দটিকে গ্রহণ করেছেন।
প্রাচীনতার দিক থেকে 'বঙ্গ' নামটির সমর্থন অনেক পাওয়া যায়। আবার আধুনিকতার বিচারে পাওয়া যায় 'বাংলা' নামটির সমর্থন । এখন বাংলা নামটি ব্যবহারের মুশকিল হোল
(১) না, 'বাংলা' কোনো মদের নাম নয়। ঐ নামে কোনো মদও পাওয়া যায় না। কিন্তু দেশজ পদ্ধতিতে তৈরি অনেক মদকেই 'বাংলা' বলা হয় ।অনেক মদ্যরসিক না কি সেটিকে আদর করে 'বাংলু' বলেও ডেকে থাকেন ! ভাবুন ' বাংলা '।
(২) 'বাংলা দেশ ' নামে একটি স্বতন্ত্র, স্বাধীন দেশ আছে । আমাদেরই প্রতিবেশী রাষ্ট্র।তাদেরও জাতীয় সঙ্গীত কবিগুরুর লেখা। " আমার সোনার বাংলা " গানটি শুনলেই সকল বাঙালির বুকে প্রাণ আসে।ভাবুন এবার সেই দেশের মানুষরা কী করবেন ? গানে কি 'দেশ' শব্দটি যোগ করবেন ? এমনিতেই না কি একটা চোরা স্রোত আছে গানটি বাতিল করার জন্য।তাই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির প্রতি সম্মান ও আন্তর্জাতিক সৌজন্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে 'বাংলা' নামটি গ্রহণ না করাই কি ভালো ছিল ?
(৩) রাজ্যের নাম যদি ছাড়তেই হতো , রাজ্য সারণীর উপরে যদি এভাবে উঠতেই হতো তবে বর্তমান নামের প্রথম অংশটি ছাড়লে তো সেই 'বঙ্গ'ই থাকতো।তবে ?
(৪) সব নামের পিছনে যেমন একটি ইতিহাস লুকিয়ে থাকে তেমনি পশ্চিম বঙ্গ নামটির পিছনেও আছে এক ইতিহাস।ক্ষমতা থাকলেই কী আর নাম পরিবর্তন করতে হয় ?
(৫) নাম পরিবর্তনের ফলে সরকারি, বেসরকারি স্তরে এক বিপুল পরিমাণ অর্থও তো খরচ হবে ? সেই তো আবার ঋণ করেই এসব করতে হবে।এত এত অফিস,আদালতের, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে, হোর্ডিং,লেটার হেড,কাগজপত্র সব ,সবকিছুই বদলাতে হবে । এরও তো একটা ব্যয় আছে ।জানিনা তার পরিমাণ কতো।যাইহোক ,যতটুকু হোক , তারও কী খুব প্রয়োজন ছিল ?
"বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস" গ্রন্থের রচয়িতা ।গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪০ খ্রীস্টাব্দে।মোট পাঁচ খণ্ডের এক অনবদ্য গবেষণামূলক কাজ তিনি করে গেছেন । দুজনেই কিন্তু শ্রদ্ধার সঙ্গেই 'বঙ্গ' শব্দটিকে গ্রহণ করেছেন।
প্রাচীনতার দিক থেকে 'বঙ্গ' নামটির সমর্থন অনেক পাওয়া যায়। আবার আধুনিকতার বিচারে পাওয়া যায় 'বাংলা' নামটির সমর্থন । এখন বাংলা নামটি ব্যবহারের মুশকিল হোল
(১) না, 'বাংলা' কোনো মদের নাম নয়। ঐ নামে কোনো মদও পাওয়া যায় না। কিন্তু দেশজ পদ্ধতিতে তৈরি অনেক মদকেই 'বাংলা' বলা হয় ।অনেক মদ্যরসিক না কি সেটিকে আদর করে 'বাংলু' বলেও ডেকে থাকেন ! ভাবুন ' বাংলা '।
(২) 'বাংলা দেশ ' নামে একটি স্বতন্ত্র, স্বাধীন দেশ আছে । আমাদেরই প্রতিবেশী রাষ্ট্র।তাদেরও জাতীয় সঙ্গীত কবিগুরুর লেখা। " আমার সোনার বাংলা " গানটি শুনলেই সকল বাঙালির বুকে প্রাণ আসে।ভাবুন এবার সেই দেশের মানুষরা কী করবেন ? গানে কি 'দেশ' শব্দটি যোগ করবেন ? এমনিতেই না কি একটা চোরা স্রোত আছে গানটি বাতিল করার জন্য।তাই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির প্রতি সম্মান ও আন্তর্জাতিক সৌজন্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে 'বাংলা' নামটি গ্রহণ না করাই কি ভালো ছিল ?
(৩) রাজ্যের নাম যদি ছাড়তেই হতো , রাজ্য সারণীর উপরে যদি এভাবে উঠতেই হতো তবে বর্তমান নামের প্রথম অংশটি ছাড়লে তো সেই 'বঙ্গ'ই থাকতো।তবে ?
(৪) সব নামের পিছনে যেমন একটি ইতিহাস লুকিয়ে থাকে তেমনি পশ্চিম বঙ্গ নামটির পিছনেও আছে এক ইতিহাস।ক্ষমতা থাকলেই কী আর নাম পরিবর্তন করতে হয় ?
(৫) নাম পরিবর্তনের ফলে সরকারি, বেসরকারি স্তরে এক বিপুল পরিমাণ অর্থও তো খরচ হবে ? সেই তো আবার ঋণ করেই এসব করতে হবে।এত এত অফিস,আদালতের, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে, হোর্ডিং,লেটার হেড,কাগজপত্র সব ,সবকিছুই বদলাতে হবে । এরও তো একটা ব্যয় আছে ।জানিনা তার পরিমাণ কতো।যাইহোক ,যতটুকু হোক , তারও কী খুব প্রয়োজন ছিল ?
না,আমি নাম পরিবর্তনের পক্ষে একেবারেই নেই ।তাই বলে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করবো,অকপটে বলছি তেমন কলিজার জোরও নেই। কিন্তু পরিবর্তন যদি করতেই হয় তবে তো ইতিহাসকে রক্ষা করেও করা যায়। ইতিহাসকে মুছে ফেলে করার কষ্টটা তো লাগবেই । তাই , ভাবুন আমরা কি ইতিহাসের প্রতি একটু শ্রদ্ধাশীল হতে পারি না?বাঙালি কি চিরকাল সেই আত্মবিস্মৃত জাতির কলঙ্ক বয়েই চলবে ?
যীশুখৃষ্টের জন্মের প্রায় ছ'শো বছর আগে যে জৈনধর্মের উৎপত্তি, সেই ধর্মের গ্রন্থ " ঐতরেয় আরণ্যক"(২-১-১-৫)-এ 'বঙ্গ' নামটির কথা পাওয়া যায়। তো,কত সহজেই পরিবর্তনের ফলে আমরা দুহাত তুলে সেই প্রাচীনতার অধিকার ছেড়ে দিলাম ?
ছাড়ুন , নাম বদলালেই বা কী এসে যায় ? আসুন একসাথে গাই , এই বেশ ভালো আছি ।খাচ্ছি, দাচ্ছি, ঘুমোচ্ছি।আম আদমির আর কী ? নাম বদলালেও যা ,না বদলালেও তা।হে মহামহিম স্যার শেক্সপিয়ার আপনিই তবে ঠিক।আপনি তো সেই কবে বলে গেছেন ...।আহ ! এভাবে ভাবলে আর কী ? চালাও পানসি ।
ছাড়ুন , নাম বদলালেই বা কী এসে যায় ? আসুন একসাথে গাই , এই বেশ ভালো আছি ।খাচ্ছি, দাচ্ছি, ঘুমোচ্ছি।আম আদমির আর কী ? নাম বদলালেও যা ,না বদলালেও তা।হে মহামহিম স্যার শেক্সপিয়ার আপনিই তবে ঠিক।আপনি তো সেই কবে বলে গেছেন ...।আহ ! এভাবে ভাবলে আর কী ? চালাও পানসি ।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন