#বিষয়:দ্বন্দ্ব
"সিদ্ধান্ত"
*******
রীনা রায়
শুধু এক মিনিট, মাত্র এক মিনিট যদি বিবেকটাকে বিসর্জন দিতে পারে, নগদ পাঁচলাখ মধুরার হাতে আসবে!
একসপ্তাহ ধরে মনের সাথে ক্রমাগত যুদ্ধ করেও এখনো কাজটা করে উঠতে পারেনি।
বুড়ির তো হার্টের ব্যামো, কেউ সন্দেহও করবেনা, বুড়ির ছেলে মেয়ে তাকে এই টোপটা দিয়েছে।
বুড়ি না মরলে তারা সম্পত্তির ভাগিদার হতে পারছেনা।
বিদেশবাসী শিক্ষিত পুত্র কন্যার কাছে মা আজ মূল্যহীন, মা চোখ বুজলে, এই বাড়ি, সম্পত্তি বিক্রি করে ওরা বিদেশ ফিরে যাবে। একমাসের ছুটিতে এসে ওরা নার্স মধুরাকে এই টাকার অফার দিয়েছে।
একবছর ধরে পঁচাত্তর বছরের রেণুবালা দাশগুপ্ত বিছানায় শয্যাশায়ী, প্রথমদিকে উনি তো হাত পাও নাড়াতে পারতেন না, মধুরার পরিচর্যায় এখন অনেকটা সুস্থ।
মধুরার মনটা আনচান করে, এই মাসিমা ওকে মেয়ের স্নেহ দিয়েছেন, যখনি যা দরকার, সব দিয়েছেন, আর এই মাসিমাকে.....
কিন্তু পাঁচলাখ টাকা পেলে যে মায়ের চিকিৎসার জন্য আর ভাবতে হবেনা, টাকাটা যে বড্ড দরকার, এত তাড়াতাড়ি এতগুলো টাকা যে আর কেউ ওকে দেবেনা।
"তুমি শুধু মিনিটখানেক বালিশটা চেপে ধরবে....", এইভাবেই বলেছিলো মাসিমার ছেলে, মেয়ে!
আজ ওরা আল্টিমেটাম দিয়েছে, ও না পারলে ওরা ওকে ছাড়িয়ে অন্য নার্স অ্যাপয়েন্ট করবে!
.....
মনের সব দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে , নিজের জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে মধুরা সোজা থানায় গেল ।
না ,ও পারবেনা। এক মাকে বাঁচাতে ও আর এক মায়ের জীবন নিতে পারবেনা!
রীনা রায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন