#বোধন
অনুগল্পঃ বোধন
শমিতা ওঝা
"ঠাম্মা! ও আমার বন্ধু!" বেশ চেঁচিয়ে উঠল নীল। এত জোরে যে ঠাকুর দালানে ঢাকের আওয়াজ, কাঁসর ঘন্টা আচমকা থেমে গেল সব। আলপনার চালবাটা হাতে মুখে লেপ্টে গেছে সোফিয়ার।ফর্সা মুখটা যেন অপমানের সিঁদুররাঙা হয়ে গেছে । ওড়নাটা বুকের ওপর আঁকড়ে, মাথা নিচু করে পায়ের বুড়ো আঙুল ঘষছে মাটিতে।
নীলের বাবা পঞ্চপ্রদীপ হাতে কাঠ হয়ে আছে। কি অমঙ্গলের কান্ড হয়ে গেল ভেবে বুক ধড়পড় করছে মেজ কাকিমণির।
ছোট পিসি তো বলেই বসল, "মুসলমান বন্ধু তো, পুজোর আল্পনা দেবার শখ যে কেন বুঝি না!" আজ ষষ্ঠী। মায়ের বোধন। এসময় এমন অনাসৃষ্টি! বাড়ির ছেলেরা উশখুশ করছে, সোফিয়ার দুগাল বেয়ে চোখের জলের ধারা।.... ঠাম্মার হাতে কেড়ে নেওয়া চালবাটার বাটি।.... সবটাই যেন স্থিরচিত্র!
কয়েকটা মুহূর্ত কেটে যায়। লাল পাড়ে শাড়ির ঘোমটাটা মাথার উপর টেনে এগিয়ে আসে এবাড়ির সবচেয়ে আচারনিষ্ঠ, ধর্মপ্রাণ মানুষ, নীলের মা। সবাইকে অবাক করে দিয়ে, সোফিয়ার হাতে মুখে লেগে থাকা আলপনার চালবাটা, চোখের জল নিজের আঁচলে মুছিয়ে দিয়ে, শান্তভাবে বলে, "আয় মা, আমার ঘরের চৌকাঠে আলপনা দেওয়া বাকি, তুই ছাড়া সে আলপনা এবছর কেউ দেবে না!"
এই প্রথম নীলের মা, বাড়ির বড়দের কথা লঙ্ঘন করল, এই প্রথম মায়ের ঘরে অহিন্দু মানুষ চৌকাঠ পার হল।
নীল চেয়ে দেখে মায়ের চোখে নতুন আলো, বোধনের ঢাক বেজে ওঠে। ঢ্যাম কুড় কুড়... শব্দে ওর বুকে খুশির রেশ ছড়িয়ে পড়ে।.... বোধনের মন্ত্র আরম্ভ হয়... – “উত্তিষ্ঠ মাতঃ স্বগুণৈর্মহিন্না পুত্রান প্রবুদ্ধান কুরু নিজশব্জা।”.... মা তুমি এবার উঠ ইত্যাদি... দুর্গা মায়ের মুখটা এখন কি একটু বেশি উজ্জ্বল....!
অনুগল্পঃ বোধন
শমিতা ওঝা
"ঠাম্মা! ও আমার বন্ধু!" বেশ চেঁচিয়ে উঠল নীল। এত জোরে যে ঠাকুর দালানে ঢাকের আওয়াজ, কাঁসর ঘন্টা আচমকা থেমে গেল সব। আলপনার চালবাটা হাতে মুখে লেপ্টে গেছে সোফিয়ার।ফর্সা মুখটা যেন অপমানের সিঁদুররাঙা হয়ে গেছে । ওড়নাটা বুকের ওপর আঁকড়ে, মাথা নিচু করে পায়ের বুড়ো আঙুল ঘষছে মাটিতে।
নীলের বাবা পঞ্চপ্রদীপ হাতে কাঠ হয়ে আছে। কি অমঙ্গলের কান্ড হয়ে গেল ভেবে বুক ধড়পড় করছে মেজ কাকিমণির।
ছোট পিসি তো বলেই বসল, "মুসলমান বন্ধু তো, পুজোর আল্পনা দেবার শখ যে কেন বুঝি না!" আজ ষষ্ঠী। মায়ের বোধন। এসময় এমন অনাসৃষ্টি! বাড়ির ছেলেরা উশখুশ করছে, সোফিয়ার দুগাল বেয়ে চোখের জলের ধারা।.... ঠাম্মার হাতে কেড়ে নেওয়া চালবাটার বাটি।.... সবটাই যেন স্থিরচিত্র!
কয়েকটা মুহূর্ত কেটে যায়। লাল পাড়ে শাড়ির ঘোমটাটা মাথার উপর টেনে এগিয়ে আসে এবাড়ির সবচেয়ে আচারনিষ্ঠ, ধর্মপ্রাণ মানুষ, নীলের মা। সবাইকে অবাক করে দিয়ে, সোফিয়ার হাতে মুখে লেগে থাকা আলপনার চালবাটা, চোখের জল নিজের আঁচলে মুছিয়ে দিয়ে, শান্তভাবে বলে, "আয় মা, আমার ঘরের চৌকাঠে আলপনা দেওয়া বাকি, তুই ছাড়া সে আলপনা এবছর কেউ দেবে না!"
এই প্রথম নীলের মা, বাড়ির বড়দের কথা লঙ্ঘন করল, এই প্রথম মায়ের ঘরে অহিন্দু মানুষ চৌকাঠ পার হল।
নীল চেয়ে দেখে মায়ের চোখে নতুন আলো, বোধনের ঢাক বেজে ওঠে। ঢ্যাম কুড় কুড়... শব্দে ওর বুকে খুশির রেশ ছড়িয়ে পড়ে।.... বোধনের মন্ত্র আরম্ভ হয়... – “উত্তিষ্ঠ মাতঃ স্বগুণৈর্মহিন্না পুত্রান প্রবুদ্ধান কুরু নিজশব্জা।”.... মা তুমি এবার উঠ ইত্যাদি... দুর্গা মায়ের মুখটা এখন কি একটু বেশি উজ্জ্বল....!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন