মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯

রীনা রায়



তিস্তারা স্বপ্নটুকু অন্ততঃ দেখার স্বাধীনতা যদি পেতো

''তিস্তা''
*******
পুতুলটা দেখ মা, কত সুন্দর বটেক.... মা, দেখ কেনে না....
উসব ঐ বাবুদের বিটিছেলেদের লগে--তুয়ার লগে অন্য কিনে আনবক রে মা......
ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে দেখে তিস্তা.....
তার মা সাধ করে তার নাম রেখেছিলো 'তিস্তা'।
ভারী পছন্দ তার নিজের নামখানা, ঠিক বাবুদের বাড়ীর মতো!
বাবুদের বাড়ীর মতো নামটো তার হইত্যে পারে, আর পুতুলটা কেন হবেক লাই?
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সে স্বপ্ন দেখে পুতুলটাকে, তার সেই স্বপ্নের কথা বস্তির অনেকেই শোনে আর হাসে।  উয়ার বড়ঘরের বিটি হইবার সাধ হইনছ্যে রে তিতার মা...(তিস্তা, তাদের মুখে তিতা-ই হয়ে গেছে)

সেদিন, স্বাধীনতা দিবসে, গলির মোড়ে এলাকার বিধায়ক পতাকা তুলতে এসেছিলেন। বস্তিবাসী সকলকে নিজে লাড্ডু বিলি করেছিলেন, তারপর তার দীর্ঘ বক্তৃতা গোল হয়ে বসে সবাই শুনেছিলো..... দেশের,দশের কত কথা তিনি বলে গেলেন, মাথায় না ঢুকলেও সবাই বসে ছিলো, রান্নার ঝামেলা কারুর ছিলোনা, কারণ বিধায়কের সৌজন্যে দুপুরে সবাই পেটপুরে খিচুড়ি খাবে এমনটাই আশ্বাস পেয়েছে তারা। সবাই খুশীতে মশগুল ছিলো।

রাজুদা তিস্তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলো নির্মীয়মান ফ্ল্যাটবাড়ীতে, তার প্রিয় পুতুলটা তাকে দেবে বলে...
---------------
এখন আর সে তাকায় না কোনো পুতুলের দিকে, কেউ পুতুলের কথা বললে আতঙ্কে সে নীল হয়ে যায়, যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠে......

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন