বুধবার, ১৪ জুন, ২০১৭

তুষ্টি ভট্টাচার্য

  উল্টে দিলে  

      উল্টো না উটলো। উঠল না রে বাবা! উলঠে যায় না কিছু। মিছু পিছু নিয়েছে বলে ভেব না ঘাবড়ে যাব। ঘাড়বে ঘাম তো এমনিই নামছে, গরমে। গমর মানে জান? গরু মরেছে রবে। হায়ও রাব্বা!! এ সব কী ব্বাবা? পান্তাবুড়ি আনতাবড়ি রাবড়ি খেলে এমন হয়। লালু না আলুও না, বাবড়ি চুলের সাঁই গো সে। হেব্বি হাইফাই। দিনরাত সাঁইসাঁই সাইকেল চাল্লে পৌছয় হনুমানের কাছে। তাপ্পর চল্লিশ বার নমো করে চালিশা পড়ে নালিশ করে ভীষণ! বিভীষণ জেগে উলঠে যা হয় আর কী! নাহ! আন্না ব্বাবা! যাইগে নাইগে...
       নাইবার কথায় খেয়াল হল, সাবানের ফেনায় সেবার পা হড়কে সে ক্ষী অবস্থা গো মা! পা’টা সেই যে গেল, আর ফিরে এলো না। সেই থেকে আর সাবান মাখি না। কসম সে! সচ্চি!! একটা গামছা দে চামড়ায় ডলা দিই আর কিছু ছালের সঙ্গে ময়লাগুলো ডেলা পাকিয়ে দড়ির মত উঠে আসে। আর সেই দড়ি বে বে আমি উঠে যাই স্বর্গের সিঁড়ির একদম কাছে। আর পৌঁছেই মনে হল, এই যাঃ! গা মোছাই তো হল না! সেই ভেজা গায়ে স্বর্গের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে হাওয়া খেয়ে সেবার আমার নাকের জলে, চোখের জলে অবস্থা। মানে কোনটা চোখের আর কোনটা নাকের, কেমন যেন গুলিয়ে গেল। আর গুলিয়ে গেলেই আমার ধেবড়ে যায়। পেটের মধ্যে কেমন একটা ভুটভাট ভটভট আওয়াজ দিয়ে কেউ একটা সাইলেন্সার ছাড়া বুলেটে স্টার্ট দিচ্ছে মনে হয়। না গো, সত্যিই বলছি, গ্যাস হয় নি। থোরিসি রুমানি হয়েচে। রুমানি বোঝ না? রুমালী রুটিকে কেটে কেটে ছোট টুকরো করলে রুমানি বলে। তা সেই রুমানি গুলো খেয়ে ব্রেনটা কেমন যেন আউল্যা হয়ে রয়েছিল কদিন ধরেই। বুঝলাম গত জন্মের বাউল মেলার পরবর্তী এফেক্ট এটা। তা আমায় দেখে কে যেন আওয়াজ দিল – পুরো ঝলিসে দিলে মাসীমা! মাসীমা বললে আমার হেভভি মজ্জা হয় আর অসীমের কথা মনে পড়েসেই যে অসীম, যে কিনা কোন এক ভূতুড়ে দুক্কুরে গলুইয়ের ভেতর একটা আস্ত নৌকোকে পাচার করে দিয়েছিল। পাচার বোজ নি? আরে যেভাবে গরু পাচার হয় সীমানা ডিঙিয়ে। তারপর থেকে অসীম স্রেফ হাওয়া হয়ে গেছে। হাওয়া মানে বোঝ তো? এই যে বাতাস গো, বাতাস, যেখানে অক্সিজেন কম, কার্বন বেশি। তা সেই অক্সিজেন কম, আর কার্বন বেশি অসীমের তাপ্পরই মাকে মনে পড়ে যায়।  
       মার পড়লেই পিঠের কথা আসে। পিঠ মানেই শিরদাঁড়া। আর সেখান থেকে নেমে এলো একপ্রকার স্রোত, যাকে আবার কারেন্টের ছ্যাঁকা ভেবো না। সে হল গিয়ে একপ্রকার হিম, এক হিমু আর আরেক হিমি, যাদের নিয়ে সবাই হিমসিম খেতে খেতে ঠিক করল এভাবে আর চলতে পারে না। কে যেন চিমটি কেটে বলে উঠল, এই গমরে তো হব্বি ভুলভাল বকছো ঠিকঠাক বকনা। আরে, বকনা গাই কিনেছিনু একবার। তারপর সে কী দুলুনি মাসীমাগ! ম্যাগি খেয়ে থামল তাপ্পর থামলে কী হবে! টাফাটাফি খেলিছে বিশ্ব লয়ে সে এক অনাথ হিসু। আর ছেল এক ফাটা বাঁশ, কোথায় যেন! আমি আনিয়াছি তারে হেথায়। ফাটছে আর টাফছে। এই নিয়ে বাঁশাবাশিঁ আমাদিগের চলিতেছে গতজম্ম থিকা।
    গতজন্মের কথা জাতিস্মর মনে রাখে। আমার কি আর সেই সাধ্য আছে? সাধ থাকলেও সাধ্যে কুলোয় না। কুলোর বাতাস দিয়ে কে যেন এক্কেরে পিথিবির ওপারে ঝেড়ে দেয় আমারে। আর ওপারে গিয়ে দেখি, পাড় কই? কূলই নাই, তো পাড় কোনছার? বলছিলাম কী ছার, আপনার বোধবুদ্ধি হল গিয়ে অনেক হাই লেভেলের। আমার কূল আর কিনারা নিয়ে মাথা না ঘামালেই ভাল। এক তো এই গরমে হেব্বি ঘাম আর তাই নিয়ে তার হেব্বি ঘ্যাম, ভারী কারবারে আপনার দুর্মূল্য মাথাখানা ঘামালেই মানায়। এসব ছেঁদো ছিছিক্কারে আপনি কান দেবেন না ভুলেও কানকাটার মত। কানের অনেক দাম গো দাদা। দিদিদেরও তাই বলি। অযথা কানে তুলো দেবেন না। তাচ্চেয়ে বাডস ভাল। খোল বেরোবে গদগদ করে। আর তাপ্পরই আপনারা কানের তালা খুলে আচ্ছাসে শুনবেন ভাল ভাল কথা। ও হ্যাঁ, ভাল কাকে বলে জানেন? আমি ভাল। খুব ভাল। আপনিও ভাল, খুব ভাল। ওঁরাও ভাল, খুব খুব ভাল। আজ্ঞে হ্যাঁ, আপ ভাল তো জগত খারাপ। আর জগত ব্যাটার সেই যে ফাঁসি হল ক্ষুদিরামের সঙ্গে, সেই থেকে তার আর দেখা নেই। ক্ষার খেয়ে সেই থেকে আমিও রেডি। জগতকে খুঁজে আনা হল গিয়ে আমার নৈতিক কত্তব্য। না, না, এর মধ্যে নীতিকে টানবেন না পিলিজ! নীতির রীতির সঙ্গে জমজমাট পিরীত চলছে। ওদের বাড়া ভাতে বরং কিছু ছাই ঢালায় মন দিই আমরা। আর মনটনের কারবারে আমরা যারা টনটনে জ্ঞান নিয়ে জাহাজের ব্যাপারী, তারা একদমই থাকি না। আপনি তো সবই জানেন ছার! আপনে হলেন গে সর্বজ্ঞ গাধার মত পন্ডিত, থুরি সর্বজ্ঞ পন্ডিতের মত গাধা। আপনে জানবেন না তো কে জানবে! আদা খেলে গলাটা বেশ খোলতাই হয়। ভাষণ-টাসন দিতে যাওয়ার সময়ে আদা খুব উপকার করে। আদার মস্ত সুবিধে হল, তার কোন আঁধার নেই, এমনকি আধার কার্ডও লাগে না তার। এমনি এমনিই হরলিক্স খেতে খেতে যেকানে সেকানে সেঁদিয়ে যেতে পারে। অ্যান্ড আদার পারপাসও আছে কিছু তার। সেটাই একটু খোলসা করি। খোলস ছাড়াতে ছাড়াতে এবং ছরাতে ছড়াতে একা হয়ে যাওয়া আদা এরপর কেমন যেন ধাঁধার মত আচরণ করতে থাকে। মানে আদার ব্যাপারে থাকবে নাকি গলা খুসখুস সারাবে, নাকি তরকারিতে মিশে গিয়ে ঘেঁটে যাবে... তো স্যার, আপনি হলেন গিয়ে স্বয়ং এক ইয়াআআ বড় জাহাজ, আপনার আর আদার পারপাস নিয়ে মাথা ঘামানো শোভা পায় না। আর আমি বরং এই সু্যোগে শোভাবাজারের ঘাটে ছই দেওয়া নৌকো নিয়ে প্রচন্ড প্যাঁচ মারি গিয়ে। সে এক মস্ত সমস্ত প্যাঁচ যার মধ্যে সাতশো জিলিপি ইন্‌ক্লুডেড, বাকি কিছু ঘাটে দাঁড়িয়ে বিড়ি ফুঁকছে তখনও। সে যাই হোক, এই চ্যাপ্টার ছেড়ে দিন গে এবারের মত। আগে বড়হো... ফরওয়ার্ড মার্চ... অ্যাবাউট টার্ন...... নেক্সট্‌ট্‌ট্‌ট্‌!!!!!  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন