রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭

অনিন্দ্য রায়


ছায়াবীথিতলে


যেভাবে মুষ্টিতে আসে ছড়ানো আঙুল,তালু
গোল হয়ে, ছোট হয়ে সমস্ত শক্তিকে 
                                              আনে  ঘন করে 
যেভাবে বেলুন তার নিজ চাপে বিস্ফোরিত হয়
যেভাবে কাগজ মুড়ে তাতে আঁকা নিসর্গভুবন 
                                  বন্ধ করে অতৃপ্ত আর্টিস্ট
যেভাবে বরফ গলে, বাষ্পীভূত জল
জানি, এর কোনোটিই নয়

লুডো খেলতে খেলতে হঠাৎ যে উল্টে দেয় বোর্ড
                                                 সেরকমও না
সূর্য ওঠার মতো, অস্তের মতো 
আলোআঁধারির প্রিয় কাটাকুটি-প্যাটার্নের মতো
জানি, সব গুটিয়ে আসবে
বলের ব্লাডার থেকে বাতাস বেরিয়ে গেলে 
তেমনি আকাশে ধ্বংস হবে মহাকর্ষ
জানি, তবু দুহাত বাড়াই , তর্জনী সক্রিয় করি
আ-তরযোনিতে 
প্রতিটি স্পর্শকে চিনি ঘ্রাণেন্দ্রিয় দিয়ে
আর ত্বকে অসংখ্য চক্ষু  জন্ম নেয়
দেখি এই আলোপাঠ্য, শুনি আলোগীতি

কোথাও ছিল কি প্রাণ ? আমার শরীর ছাড়া আর কি কোথাও
মহাসমুদ্রের তলে স্ফুট হত অযুত বুদবুদ ?
এবং সঙ্গীর খোঁজে হয়ে ওঠে তারাও চঞ্চল ?

সেই সমুদ্রেও আছে প্রবালকীটের অভিমান
আছে শ্যাওলার কেঁপে ওঠা যতটা সম্ভব মানবিক
জলে যে লবণ আছে
   অশ্রুর, রক্তের, ঘাম বা রসের মতো স্বাদের ভিন্নতা
চিনেছে একটি জিহ্বা, ডুবোপাহাড় একটি
ছোট ছোট দারুচিনিদ্বীপ
বেলাভূমি জুড়ে আছে নগ্ন মানুষের অবসর
রিসর্ট ও ঋষি
আছে ভ্রমণকাহিনী
প্রেমের কবিতা
ইমারত
স্টেডিয়াম
হাওয়াই আড্ডা
সবই তো ধ্বংস হবে
সূর্য, সেও হলুদ বসন খুলে লোহিতদানব হয়ে গিলবে সকল 
      গ্রহ, উপগ্রহ, পাথর, তৈজস
মৃত্যু হবে তারও

সব আলো নিভে যাবে
সব অন্ধকারও

একটি বিন্দুর গর্ভে ঢুকে পড়বে রেখচিত্র সব

যদি ওই বিন্দু অব্দি আমার শ্বাসের কণা টিকে থাকতে পারে
ডিমে ফুটবে আবার কুসুম

আবার তোমার সঙ্গে দেখা হবে, শ্রী
এই ছায়াবীথিতলে


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন