রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭

মঞ্জু বন্দোপাধ্যায় রায়

অবসর মতো ভালোবাসিও
     
     
অবসর শব্দটার সাথে মিশে আছে অভিমান
কিন্তু যে নদী অবিরাম বয়ে চলে
 
তার কুলকুল শব্দে উঠে আসে
 
অবসর মতো ভালোবাসিও ।
এগিয়ে চলার স্বপ্ন পূরণে উপরের সিঁড়িটায়
ঘোরেফেরে
  গদগদ ভাব ।
যে বেঞ্চ এনেছিল আজকের দশটা পাঁচটা
 
কতটা বছর গড়িয়ে গেছে
  হয়েছে কত জলঘোলা ।
স্কুলের শেষপাঠে দেখেছিলাম বেঞ্চের চোখে জল 
কোনো ডাস্টার আসেনি
  মুছতে তখন
অনায়াসে চাপা পড়েছিল
  নতুন নতুন ইউনিফর্ম ।
আমার চোখের এক আঁজলা জল যখন 
জমেছে পাঁজরের খানা খন্দরে
অথচ চোখদুটো
  তখন ঘুরঘুর করতে ব্যস্ত 
কলেজ করিডরে
 
সেই শাড়ি সেই ব্যাগ কিছুটা ফ্যাকাশে আজ
 
তবু শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে আছে মুঠো মুঠো কৈশোর
এটুকু  কিন্তু  ভুলো না 
সময় পাল্টে পাল্টে অবসর মতো ভালোবাসিও
 
রাতের চোখে নেমে আসে যখন বেদনাতুর কর্ম অবসর
তখন
  দিবাস্বপ্ন  এঁকে দেয় অজস্র  ঘাত প্রতিঘাত ....
_________________________________________
স্যাটিসফাই
মঞ্জু  বন্দোপাধ্যায় রায়
যেতে যেতে যদি থমকে যাই
ভেবোনা ভয় পেয়েছি
 
তোবড়ানো গালে বড় আপন একটা ইজিচেয়ার ।
যার সামনের দেয়ালের কোণে মাকড়শা মহানন্দে  দিন কাটিয়ে দেয় 
আমি দেখতে দেখতে আজ আর ক্লান্ত হই না।
কত অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পরে চোখের কানা বেয়ে
একটা কৃত্রিম নদী সৃষ্টি হয়
যার পাড়ে মেঘ জমলেই ঝরে পরে বর্ষা
 
সেই সময় যে ময়ূর পেখম মেলে নেচে ওঠে
 
তা দেখে মন যে কতখানি আনচান করে
সেটা শুধু ঐটুকুতেই থাক
বেশী বলা কাম্য নয়।
ব্লাডপ্রেশার , ব্লাডসুগার বেড়েই চলেছে
ডাক্তার শুধু মেশিনে মাপছে আর ওষুধ লিখছে
 
কারণ জানতে পারছে না ।
থরে থরে  সাজানো ভর্তি বোতলে মেডিক্লেমে  উপচে পড়ছে গুরুত্ব
আর সেই গুরুত্বটা  অন্ধকারে ছুড়লে অবশ্যই  গিয়ে পড়ছে কোনো কেউকেটার মাথায়। 
আমি বাবা বেঁচে গেছি
  ,আমার তো মাথাটাই নেই ...
_________________________________________
সরি
মঞ্জু বন্দোপাধ্যায় রায়
আমি কে ? কি জানি , আমাকে ডাকতেই পারো
চেয়ে দেখো মাটি আমি
 
তবু যে এরোপ্লেনটা দ্রুত সরে যাচ্ছে
তাকিয়ে থাকি অনিবার।
উপরে বেশি না তাকানোই ভালো
বড় এবড়ো খেবড়ো
হোঁচট খাওয়ার সম্ভবনা থেকেই যায় ।
চেয়েছিলাম একটা লাগামছাড়া সন্ধ্যা
চাঁদের আলোয় ধুয়ে যাচ্ছে লাগাতার আক্রোশ ।
মনে পরে সেই বিকেলগুলো 
একটা নদী জোয়ারে ছলাৎছল
ফেলে যাওয়া পলি চিনে রেখেছে প্রতিটি পদচিহ্ন ।
আজও বেঁচে আছে নিঃসঙ্গ সেই বেঞ্চটি
 
যার ঠেসে মহাসমাদরে আবছা অপেক্ষা ।
কেন অপেক্ষা ? কিসের অপেক্ষা? 
ভেসে আসছে
  ভীমপলশ্রী
ঘর ফিরতি পাখির ডানায়
 
মিলিয়ে গেছে রংবেরঙের জেল্লা ।
শিকওলা জানলার ফাঁকে
মার ব্যাকুল দুটো চোখ
টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।
ঠাকুর ঠাকুর করে সব ভুলে থাকতে চাই।
কি  হাঁদাটাই না ছিলাম
আজ আর এক মিনিট ও দেরী করবো না
 
বলে দেবো
    সরি ...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন