শনিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২২

শর্মিলা ঘোষ

        




অণুগল্প

একটি অবিশ্বাসের জন্ম 


বুকের ভেতরটা কফি কাপের মতো উষ্ণ, ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে যাচ্ছে চোখ।নীলা বসে আছে সমুদ্র শুষে নেবে বলে।তার এলোমেলো চুল ঝাউপাতার মতো দোলা খাচ্ছে।অমলেশ ছবি তুলতেই ব্যস্ত, সুন্দরী স্ত্রীর দিকে লক্ষ্য তার বরাবরই কম।ইংরেজির প্রফেসর অমলেশ, আর নীলার একটা বুটিক আছে গড়িয়াহাট থেকে একটু এগিয়ে গিয়ে ।
রাকেশ একটু দূরেই ডাব কিনছে, সে চেঁচিয়ে ডাকলো , কি রে অমলেশ ডাব খাবি তো! অমলেশ হাত নাড়লো।রাকেশ দুটো ডাব নিয়ে নীলার পাশে এসে বসলো। নীলা আজ রাতেই কাজটা সেরে ফেলো , কোনো ঝক্কি ঝামেলা হবে না , খুব সহজেই হার্ট অ্যাটাক বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে , তারপর তুমি আমি আর অসীম সমুদ্র....... জলোচ্ছাস । নীলা আবার উদাসী অমলেশের দিকে তাকালো.......অমলেশের সাথে তার কলেজ থেকে প্রেম ছিল আর রাকেশ সেই কলেজ থেকেই তার পিছনে পড়েছিল।অমলেশের উদাসীনতা তাকে রাকেশের দিকে কিছুটা ঠেললেও সে অমলেশকে ঠকাতে চায়নি।অমলেশেকে নীলা সন্তান দিতে পারবে না জেনেও অমলেশ কোনোদিন কোনো অনুতাপ করেনি, অন্তত নীলার কোনোদিন তা মনে  হয়নি।
অমলেশ আসছে ঝাঁকড়া একমাথা চুল এলোমেলো হয়ে আছে, রাকেশের দিকে তাকিয়ে বলে , যা তিনকাপ চা নিয়ে আয়! সঙ্গে বিস্কুট আনিস।
রাকেশ চা নিয়ে আসছে, নীলার মুখটা ফ্যাকাশে আর চোখটা ঝপসা হতে থাকে।
রাকেশ চায়ের ভাঁড় গুলো তুলে দেয় ওদের হাতে;
সমুদ্র যেন ক্রমশ উত্তাল হচ্ছে, আর একটু পর জল ওদের পায়ের পাতা ছোঁবে।আকাশের রঙ এখন ঘন নীল, মনে হয় কে যেন অন্তরের সব অভিযোগ ঢেলে দিয়েছে আকাশের গায়ে।
অমলেশ বিস্কুটে কামড় দিয়ে চায়ে চুমুক দেবে বলে সবে প্রস্তুতি নিচ্ছে ....... নীলা এক ঝটকায় ফেলে দেয় ভাঁড়।
অমলেশের বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নীলা, কাঁদতে থাকে, অমলেশ স্থির, অবিচল।রাকেশ ততক্ষণে উঠে দাঁড়িয়েছে , এগোচ্ছে সমুদ্রের দিকে............



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন