শনিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২২

কৌশিক সেন

              





 অবেলার খন্ডদৃশ্যগুলি

-১-

দৃশ্য পট থেকে শঙ্খচিল উড়ে গেলে তোকেই বসিয়ে রাখি স্বপ্নের কিনারায়। ভরদুপুরে গোলাপি বাতাবীলেবু ঠুকরে খায় নাম না জানা পাখিরা। জানলা দিয়ে দেখি বিক্ষিপ্ত রোঁয়া, রস, রমণ, রিরংসা।  নিস্তেজ হাতে চাকা ঘুরাই অস্তাচলের দিকে।

-২-

অনেকটা চাঁদের মতো।  অস্পষ্ট আলোয় বড়ই কাকতালীয় সে কলঙ্ক।  নিষাদের লক্ষ্যভেদী তীর ধেয়ে আসে নিষেককামী শুক্রবীজের দিকে। অধোবদনে দাঁড়িয়ে থাকে মায়ের দূরসম্পর্কের চাঁদভাই।  যাকিছু রিক্ততা, সবটাই রেখে আসি ভুবনডাঙার মাঠ বরাবর।

-৩-

চলে আসি। স্বাতিনক্ষত্রের আলোয় রেখে আসি অবধারিত বদনাম।  বেগুনী আলোয় স্নান সারে হলুদবনের হরিণীরা।  পথ ভুলে যায় নদীর ছায়াপথে।  আমি চলে গেলে আমার এঁটো রেকাবী নামিয়ে রাখে মা।  রূপকথার আলোয় স্পষ্ট হয় উচ্ছিষ্ট মাছের কাঁটা আর ক্ষুধার্ত আঙুলের দাগ।

-৪-

এখন রবিবার।  কয়েকদিন ধরেই।  দুপুরের গরাদে দোল খায় মাসকাবারি মুদিখানার ফর্দখাতা।  খাতার পাতায় পাতায় এখন চড়াইপাখির মিথুনদৃশ্য।  তেল হলুদে ভিজে ওঠে পাড়ার বিধবা ঠাকুমারা।  মধ্যরাত পেরোলেই কাঁচাঘুম ভাঙিয়ে ছুট দেয় হারামজাদা সোমবার!

-৫-

পাশবালিশের গান শুনি।  পথের দুধারে গজিয়ে ওঠা শিয়ালকাঁটার ঝোপে প্রজাপতির মতো নির্ভার স্বরলিপি সব।  কানের ভেতর ডুগডুগি বাজিয়ে ভালুকনাচ দেখিয়ে গেছে দূরগাঁয়ের শাওনচাচা।  কোর্টের বাজারে বিণ বাজে আজকাল।  তালে তালে মাথা নাড়ে জাত খড়িশ।

-৬-

মৃত্যুর পূর্ববর্তী নিসর্গ এখন।  পলেস্তারা খসা দেয়ালে জায়গায় জায়গায় এখন মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের ইতিহাস।  প্রশ্নাতীত কিছুই অবশিষ্ট নেই আর।  নিপাতনে সিদ্ধ সবকটি কবিতাই এখন প্রকাশিত হবার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে।  আমার নির্বাণলাভ হলনা আর!


 


২টি মন্তব্য: