রবিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২২

তৃষ্ণা বসাক

                               



নব্বই সিরিজের কবিতা


ভালবাসা (১)

 

রেখেছি  আঙুল

তার একান্ত আঙুলে,

এর মধ্যে অন্য কোন আঙুলের খেলা

(সুতোর নাচনে যথা

পুতুলের হেলা নিষিদ্ধ করেছি)

#

তারপর দুদণ্ড জিরোই,

সে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে,

তাকে তুলে রাখি

তার হাত থেকে খসে পড়া বই,

চশমা খুলে রাখি চোখ থেকে,

পাশের চেয়ারে বসে একদৃষ্টে চেয়ে থাকি,

পায়ের নখ থেকে চুল অব্দি

আমি তার আদরিণী হই,

শুধু আর ঘুমোতে পারিনা,

এর পর কোনদিনই ঘুমোতে পারি না।



ইতিহাস

 

একজন চল্লিশোত্তর, আর একজন পঁচিশ ছুঁই ছুঁই,

দুই মিনার ঘেঁষে দাঁড়িয়েছে এই দুই পুরুষ,

একজন ইতিহাসমগ্ন, খুব দূরবর্তী কিছু নয়,

বছর পনেরো আগে এই জায়গা কীরকম ছিল...

 

অন্যজন শুনতে শুনতে

ক্যামেরার লেন্সে চোখ রাখে,

শ্বেতপাথরের এই স্বপ্নোত্থান গ্লসে নাকি ম্যাটে...

#

একজন চল্লিশোত্তর, আর একজন পঁচিশ ছুঁই ছুঁই,

তরুণীটি কোনভাবে মাঝখানে ছিল না,

অথচ সে সারাক্ষণ দেখে গেল

জল ভেঙে ভেঙে এগোচ্ছেন উত্তর চল্লিশ

ফেরার সময় তাঁর দুই হাতে আখ্যান মঞ্জরী!

#

তরুণীটি কোনভাবে মাঝখানে ছিল না,

বিশীর্ণা যমুনা নিয়ে সে বড় ভাবনায় ডুবে ছিল,

যেমন যেখানে ছিল ফিরে গেল উপাখ্যানমালা,

গ্রুপ ফটোয় তরুণী দেখে

ধড় আছে, মুণ্ডুখানা নেই!




বহুদিন হয়ে গেল, চাদর পালটানো হল না

 

এসেছি বিশেষ কাজে,

হোটেল ঠিক করাই ছিল,

শুধু চাবি নেওয়া

আর এক লাফে তিন-চার সিঁড়ি,

কোন সঙ্কেত নয়, চাবি, এমনি সাধারণ চাবি।

ঘর খুললাম আর ঢুকে পড়লাম,

ঢুকে পড়লাম আর ব্যাগ রাখলাম,

ব্যাগ রাখলাম আর...

 

আয়নায় মেরুন টিপ, ছেঁড়া চুল, অসংলগ্ন চুল,

সাত দিন থাকলাম, চাদর পালটানো হল না,

ওখানেই ফুল পড়ল, ওখানেই ভেসে উঠল মাছ,

আঙুলের ফাঁক দিয়ে অনর্থক গলে গেল বালি,

বহুদিন হয়ে গেল, চাদর পালটানো হল না!

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন