শুক্রবার, ১৫ মে, ২০২০

কৌশিক চক্রবর্ত্তী


আঙুল


বিক্রিবাট্টা ভীষণ কমে গেছে
তাই থরে থরে আঙুল খুলে সাজিয়ে রেখেছি আমি
তারাও বিপথগামী ছিল
কিন্তু গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় সই পাওয়া যায়নি একটাও...

হাতের কবলে হাত, ডুবন্ত শরীর-
আনাচেকানাচে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবার তাগিদ
এসবের মধ্যে আঙুলহীন মানুষের সংখ্যাই বেশি...

বইমেলার মতই ভীষণ প্রয়োজন একটা পূর্ণাঙ্গ শরীরমেলার
যেখানে শখের অঙ্গ কিনতে মুহূর্মুহু ভিড় জমাবেন শরীরপ্রেমীরা
কোনোটা রঙিন, কোনোটাতে জড়ানো রয়েছে গামছা-

তখনও আঙুল তুলে কেউ আর প্রশ্নটা করে উঠতে পারে নি
যাদের পাশে শোয়ানো রয়েছে সংশ্লিষ্ট শরীর 
শুধুমাত্র সেইসব আঙুলের দর আকাশছোঁয়া কেন!


পুড়ে যাওয়া জামা
কৌশিক চক্রবর্ত্তী 

কাল সমস্ত বুক জুড়ে খুঁজেছি ইতস্তত খই
তন্নতন্ন করে খুঁজেছি সুগন্ধী-চন্দন আর গোলাপের বীজ
পরিবর্তে যতটা কুড়িয়ে এনেছি কাদামাটি 
তার মধ্যে সিংহভাগই পরজীবি গাছ -
সভ্যতার নাম দেওয়া থেকে শুরু করে আয়নায় চিড় খাওয়ার দাগ
কোনোটাতেই আমার কোনো ভুমিকা ছিল না কোনোদিন...

ঘাসেরা বিনিময় করত মাথা তোলার গর্বিত সংস্কৃতি 
তারাও প্রতিটা পায়ের ছাপ কিভাবে শুকিয়ে তুলত ঝড়বৃষ্টির অব্যবহিত পরেও--

খোঁজ নেওয়া শুরু হবে এবার
কেউ ডেকে বলবে আমার জন্য তোলা আছে ঘর
কেউ হঠাৎ আদর করে শরীরে গলাতে যাবে জামা
অথচ তারা কেউ বুঝবে না বন্ধ ঘরে আমি এখনো আয়নার সামনে 
কিভাবে সাবলীল খুঁড়তে চেয়েছি গোপন সুড়ঙ্গ...
তাই শুয়ে থাকলেও তুমি অনায়াসে ছিঁড়ে নিতে পারো আমার পোশাক
ভালোবাসবার জন্য আমি অনেক আগেই নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে নিতাম রোজ।


এই শহর
কৌশিক চক্রবর্ত্তী 

আজ একটা শহর কিনলাম
যে শহরে একটাও গোপনীয় নর্দমা নেই
স্নানের সময় একটাও মানুষ 
গলে যায় না শূন্য ম্যানহল খুঁজে
গা ভেজানোর পর তারা সকলেই
বেমালুম চেটে নেয় রোদের সাম্পান

একমাত্র নর্দমার অভাবই
প্রতিটি নাগরিককে বেছে দেয় পথ
কোনোকিছু হারানোর ভয় নেই বলে
আমিও গ্যাসের আলো সরিয়ে
নিয়মিত পরে নিয়েছি রক্ষার কবজ

আজ একটা শহর কিনলাম 
যে শহরে একটাও ঝোলাবারান্দা নেই
রাতের অন্ধকারে কোনও বাবা
নিজের অজান্তেই ছেলেকে 
ছুঁড়ে দেয়নি রঙিন ফুটবল

আজও এই শহর জেনে এসেছে
কেবল অন্ধকারের কোনো বিবর্তন নেই
নিজস্বতার জন্য কখনো বারান্দা
অথবা নর্দমা খুঁজতে হলে
আমাদের আজও ছেড়ে আসতে হয় শহর...

বলে রাখি...
এই শহরে অন্ধকার যথারীতি না বলেই আসে...







২টি মন্তব্য: