#পিছু_ডাক
'কী রে সারাদিন মোবাইলে কী খুটখুট করিস?'
'লিখছি বাবা, লিখছি!'
'লিখছিস? মোবাইলে?'
'হুম'
'ধুর! যত্তসব ছাইপাশ'
'আজ্ঞে না! কাল একটা দশ শব্দের গল্প লিখেছিলাম। হুড়মুড়িয়ে লাইকস পড়েছে! সবার দাবি ২০২০ তে একটা কুড়ি শব্দ তো বনতা হ্যায়!'
'কুড়ি শব্দে একটা জীবনের গল্প? পারবি ধরতে?'
'পারব বাপি, খুব পারব! সবাই পারছে। ইট'স আ চ্যালেঞ্জ!'
'ও… হবেও বা!'
'দশ শব্দের গল্পটা পড়বে?'
'হুম পড়া'
'"আজ আকাশ বড্ড কালো। একফালি কালো মেঘ আজ অসীমার মনেও!"'
'তারপর?'
'তারপর আর কী! ফিনিসড!'
'শেষ কী রে? এ তো সবে শুরু…'
'শুরু বললে শুরু, শেষ বললে শেষ… সেটা পাঠক ডিসাইড করবে।'
'তোর পাঠকও আছে?'
'কাম্মন বাপি! ফেসবুক এখন সাহিত্যের নতুন প্ল্যাটফর্ম।'
'এই তোদের বাপ-মেয়ের কচরকচর শেষ হলে খাবি আয়। মেলা কাজ পড়ে আছে। মালতী আসছে না… ঘটিবাটি মেজে ধুয়ে কোথায় একটু সাহায্য করবে দু'জনে তা নয়! খালি ফেসবুক আর মোবাইল!'
'আসছি মাম্মা ডিয়ার…..ম্মুউউয়া….বাপি, তোমার ফেবু অ্যাকাউন্ট আছে না? তোমাকে ট্যাগ করব। লিখতে হবে কিন্তু! সবাই পারছে তুমিও পারবে।'
'আরে আমি তো তেমন…'
'আরে টেক-ফ্যাক্ট নিয়ে চাপ নিও না। আমি আছি তো! ইউ জাস্ট টাইপ!'
বলেই ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেল তিতাস। মোবাইলটা হাতে ধরে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেন মহেনবাবু।
……………………………………………….
'বাবা...আসব?'
'কী চাই?'
'একটু কথা ছিল। একটু সময় যদি…'
'বলো শুনছি'
'একটা নতুন গল্প লিখেছি….একটু যদি পড়ে দেখেন…'
'কী করেছ? লিখেছ?'
'হ্যাঁ বাবা! একটা নতুন গল্প… ছোটকাকুকে পড়িয়েছি। কাকু বলেছেন গল্প্টার একটা ভবিষ্যৎ হতে পারে… আপনি যদি বোধিসত্ত্ব জ্যেঠুকে বলে একটু ওঁর ছাপাখানা থেকে….'
'বাঁদর ছেলে, তুমি গল্প লিখবে? কোবতে লিখবে? কবি হবে? কবি?'
'আআ….. বাবা…. লাগছে!'
'লাগুক! একটা অপোগন্ড মূর্খ তৈরি হচ্ছে দিনদিন! ছোটকাকু, না? ছোটকাকু? ছোটকাকুকে আদর্শ মেনেছেন উনি! ব্যাটা নিজে বাউন্ডুলে…জগৎ সংসারের বোঝেটা কী ও? জানে ও কেমন করে টানছি আমি এত বড় সংসারটা?
আবার কাঁদা হচ্ছে? চোখ মোছো। যাও পড়ায় মন দাও। তুমি বাড়ির বড় ছেলে। অনেক দায়িত্ব! কাব্যি করার বিলাসিতা তোমাকে মানায় না। তোমার পরে ছোটছোট ভাইবোন আছে….। তাদের কথা তোমাকেই ভাবতে হবে।
দাঁড়িয়ে রইলে কেন? যাও…..!' '
.………………………………………………….
'দাঁড়িয়ে রইলে কেন? এসো। তাড়াতাড়ি গিলে আমাকে রেহাই দাও…'
'বাপি এখন নির্ঘাত গল্প লিখছে মা…..'
চশমা খুলে চোখটা মোছেন মহেনবাবু। মেয়ে জানে না, মেয়ের মাও না, তার গল্পের খাতাগুলো কবেই রদ্দির সাথে কিলো দরে বিক্রি হয়ে গেছে!
মেয়েটা লিখছে…. দশ বিশ…. হোক না! তবু তো লিখছে! হয়তো এটাই ওকে আগামীতে উৎসাহ দেবে। বিশ থেকে পঞ্চাশ, পঞ্চাশ থেকে একশো, দু'শ হতে হতে একদিন…..চোখটা আবার ঝাপসা হয়ে আসে। ধীরে ধীরে মহেনবাবু এগিয়ে যান খাবার টেবিলের দিকে।
'কী রে সারাদিন মোবাইলে কী খুটখুট করিস?'
'লিখছি বাবা, লিখছি!'
'লিখছিস? মোবাইলে?'
'হুম'
'ধুর! যত্তসব ছাইপাশ'
'আজ্ঞে না! কাল একটা দশ শব্দের গল্প লিখেছিলাম। হুড়মুড়িয়ে লাইকস পড়েছে! সবার দাবি ২০২০ তে একটা কুড়ি শব্দ তো বনতা হ্যায়!'
'কুড়ি শব্দে একটা জীবনের গল্প? পারবি ধরতে?'
'পারব বাপি, খুব পারব! সবাই পারছে। ইট'স আ চ্যালেঞ্জ!'
'ও… হবেও বা!'
'দশ শব্দের গল্পটা পড়বে?'
'হুম পড়া'
'"আজ আকাশ বড্ড কালো। একফালি কালো মেঘ আজ অসীমার মনেও!"'
'তারপর?'
'তারপর আর কী! ফিনিসড!'
'শেষ কী রে? এ তো সবে শুরু…'
'শুরু বললে শুরু, শেষ বললে শেষ… সেটা পাঠক ডিসাইড করবে।'
'তোর পাঠকও আছে?'
'কাম্মন বাপি! ফেসবুক এখন সাহিত্যের নতুন প্ল্যাটফর্ম।'
'এই তোদের বাপ-মেয়ের কচরকচর শেষ হলে খাবি আয়। মেলা কাজ পড়ে আছে। মালতী আসছে না… ঘটিবাটি মেজে ধুয়ে কোথায় একটু সাহায্য করবে দু'জনে তা নয়! খালি ফেসবুক আর মোবাইল!'
'আসছি মাম্মা ডিয়ার…..ম্মুউউয়া….বাপি, তোমার ফেবু অ্যাকাউন্ট আছে না? তোমাকে ট্যাগ করব। লিখতে হবে কিন্তু! সবাই পারছে তুমিও পারবে।'
'আরে আমি তো তেমন…'
'আরে টেক-ফ্যাক্ট নিয়ে চাপ নিও না। আমি আছি তো! ইউ জাস্ট টাইপ!'
বলেই ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেল তিতাস। মোবাইলটা হাতে ধরে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেন মহেনবাবু।
……………………………………………….
'বাবা...আসব?'
'কী চাই?'
'একটু কথা ছিল। একটু সময় যদি…'
'বলো শুনছি'
'একটা নতুন গল্প লিখেছি….একটু যদি পড়ে দেখেন…'
'কী করেছ? লিখেছ?'
'হ্যাঁ বাবা! একটা নতুন গল্প… ছোটকাকুকে পড়িয়েছি। কাকু বলেছেন গল্প্টার একটা ভবিষ্যৎ হতে পারে… আপনি যদি বোধিসত্ত্ব জ্যেঠুকে বলে একটু ওঁর ছাপাখানা থেকে….'
'বাঁদর ছেলে, তুমি গল্প লিখবে? কোবতে লিখবে? কবি হবে? কবি?'
'আআ….. বাবা…. লাগছে!'
'লাগুক! একটা অপোগন্ড মূর্খ তৈরি হচ্ছে দিনদিন! ছোটকাকু, না? ছোটকাকু? ছোটকাকুকে আদর্শ মেনেছেন উনি! ব্যাটা নিজে বাউন্ডুলে…জগৎ সংসারের বোঝেটা কী ও? জানে ও কেমন করে টানছি আমি এত বড় সংসারটা?
আবার কাঁদা হচ্ছে? চোখ মোছো। যাও পড়ায় মন দাও। তুমি বাড়ির বড় ছেলে। অনেক দায়িত্ব! কাব্যি করার বিলাসিতা তোমাকে মানায় না। তোমার পরে ছোটছোট ভাইবোন আছে….। তাদের কথা তোমাকেই ভাবতে হবে।
দাঁড়িয়ে রইলে কেন? যাও…..!' '
.………………………………………………….
'দাঁড়িয়ে রইলে কেন? এসো। তাড়াতাড়ি গিলে আমাকে রেহাই দাও…'
'বাপি এখন নির্ঘাত গল্প লিখছে মা…..'
চশমা খুলে চোখটা মোছেন মহেনবাবু। মেয়ে জানে না, মেয়ের মাও না, তার গল্পের খাতাগুলো কবেই রদ্দির সাথে কিলো দরে বিক্রি হয়ে গেছে!
মেয়েটা লিখছে…. দশ বিশ…. হোক না! তবু তো লিখছে! হয়তো এটাই ওকে আগামীতে উৎসাহ দেবে। বিশ থেকে পঞ্চাশ, পঞ্চাশ থেকে একশো, দু'শ হতে হতে একদিন…..চোখটা আবার ঝাপসা হয়ে আসে। ধীরে ধীরে মহেনবাবু এগিয়ে যান খাবার টেবিলের দিকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন