শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

অনিকেশ দাশগুপ্ত

                                       





খোঁজ


বিষণ্ণ ফুঁ হয়ে উড়ছে সিঁড়িতলার অন্ধকার
রোগীর মাথার ছাপোষা জলপট্টি খুঁজে মরে 
বিশপের নির্জীব চাউনি

মোমবাতি পলক, ছিন্নভিন্ন তাসের খোসা ক্রমে
আরো মত্ততার দিকে ছুটে গেছে বাইসন শিঙায় ভর ক’রে

যে ডাকগুলি গম্ভীর ট্রাকের ঝিল্লি বিছিয়ে দেয়
সাজসজ্জার পথঘাটে

প্রাচীন বেশ্যাগলি থেকে ভেসে আসে ধ্রুপদ ত্রিকোণ
আতরের যোনি চিড়ে ছায়ালুব্ধ এক জাতকের মস্তকে
চতুর্মুখ চেরিফুল অশ্রু ঝরায় 

যেকোনো নামের সারাংশে মশগুল হয়ে ফিরে আসে
চন্দ্রাতপের পিঠে এই আমার খুঁজে পাওয়া অব্যক্ত নকশা
 
  


বলাকা


হাওয়ায় খুলেছে বুক ঐ যে দূরের মেয়ে
সাদা নামহীন ফুলের মতো ডুকরে ওঠা তরঙ্গ 
আর ভাতের মৃদু ছায়া দুলেছে দিনভর

বৃষ্টি ভাসিয়ে দিলে তারপর আমরাও কি ফিরে এসেছি
মাটি গলে যাওয়া সেসব নিঃসীম শামুকে

বার্লি খেতের পাশ দিয়ে সহসালব্ধ সরণি তার আদুর বুক
ছুঁয়ে হতচকিত দুপুরে মেলে ধরেছে ও’পাড়ার আঁশটে চিবুকটুকু 

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকের টিফিন বাক্স থেকে রোদ-ছোঁয়া সমাপ্তি
এসে তার বাহুমূলে রাজকীয় স্রোত খেলায় 
গা থেকে ঝরে মেঠো হাঁস এবং ধাপে-ধাপে উচ্ছ্বসিত হয়
নীল জংলার আহার

নদীপারের উন্মনা সাইকেল সারাটাবেলা
কুরে খায় আঁকাবাঁকা জলের চাউনিকে  



ভস্ম


শোনা যায় দূর দেশী নাবিকেরা 
তাদের সবুজ উচ্ছ্বল চোখে বহন 
ক’রে চলে টলটলে তাঁবুর অপটু নেপথ্য

যেমন ছায়া হয়ে ওঠে ফার্ণের ঝোপ অস্তরং আলোয়
আর টিলার বাঁকে মানানসই সংখ্যাগুলি ঘাসে,আঙুলে জড়িয়ে
নিয়ে উঠে আসে ভাঙাচোরা কোনো পক্ষীরাজ

হৈমন্তিক স্তন, ঠায় ন্যুব্জ হয়ে থাকা পিঠে, অকস্মাৎ যেভাবে
এলোমেলো হয় আর কাঁধে সূর্যের দূর গম্বুজ ফেটে পড়ে

সাদা ক্রাচের বিষাদ ভেঙে-ভেঙে স্থির অন্ধকারে  
একদিন ঠিক সেভাবেই, এসে দাঁড়াব আমরা 


চিত্রঋণ - ঈষা চৌধুরী
 

1 টি মন্তব্য: