রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

জয়তী রায় ( মুনিয়া)

                             


     

রিভার্স

     তোর গল্প পরপর প্রিন্ট ম্যাগাজিন নিচ্ছে! গন্ধ পাচ্ছি যেন? 

শিউলি অবাক। কিসের গন্ধ! 

: একে যুবতী। তায় সুন্দরী। দেখিস বাবা। 

হাসির হররা উঠল কফিহাউসের টেবিলে।

 রাগে দুঃখে শিউরে উঠল শিউলি। এরা বন্ধু?  তার লেখাটা দেখে এইই মনে হল? বুকের কাছে চেপে ধরল সদ্য প্রকাশিত কবিতার বই।যেন প্রতিবাদের হাতিয়ার। প্রমাণ করতেই হবে। করতেই হবে। নিজেকে। যেভাবেই হোক। 

***

বিখ্যাত লেখিকা এবং সম্পাদিকা শিউলি সাহার চেম্বার থেকে  টলতে টলতে বেরিয়ে এলো কিশোরকবি সুপম। মিষ্টি ঝলমল হাসিমুখে কে যেন অপমানের কালি ঢেলে দিয়েছে।  কিশোরের অমলিন পৃথিবীর আকাশে আজো দেখা যায় রামধনু। আজো প্রতিদিন মায়ের বুকে খুঁজে পায় শৈশবের ঘ্রাণ। আজো মিলির ব্যালকনির নিচে থেকে যেতে যেতে উপরে তাকিয়ে অকারণ হর্ণ মারে বাইকে! সেখানে কোত্থাও ছিল না এমন অভিজ্ঞতা!

 *

 ঘটনা শুনে ধমকে ওঠে বিরাজদা। 

: সতীপনা করে কিস্যু লাভ নেই। সবার কপালে শিকে ছেঁড়ে?  একটু সঙ্গ টঙ্গ দিবি। টপাস করে লেখা ছাপা হবে।

: বিরজদা! 

: আরে ধুর। মনে কর সেবা করছিস। বয়স্কা একলা মহিলা, সময়কালে বিয়ে না হলে, ওমন একটু আধটু ... বুঝলি না?

: দাদা গো। গ্রামের ছেলে আমি। বড় আশা করে কবিতা লিখছি। এমন হবে... 

  চোখ ছলছল করে ওঠে সুপমের। 

: ধুর। নাকে কান্না ছাড়। বড় আশা করে ওই শিউলিও একদিন লেখা নিয়ে ঘুরত দরজায় দরজায়। তখন নিয়েছে সুযোগ অনেকে। আজ উনি সুযোগ নেন। রিভার্স গেম। 

চোখ বিস্ফারিত সুপমের। রিভার্স গেম! জীবন মানে কি তাই? 

বিরাজ দা, বক বক করেই চলেছেন: লেগে পড়। লেগে পড়। দেখবি, কালকেই কাগজে তোর নাম ছেপে বেরুবে। 

কবিতার খাতা হাতে উঠে দাঁড়ায় সুপম--

:পারব না বিরাজদা। শিউলি ম্যাডামের মুখটা ঠিক আমার মায়ের মত। মায়ের সঙ্গে আদান - প্রদানের খেলা ঠিক জমবে না গো!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন