শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

চন্দ্রাণী গোস্বামী

                    


এক...

আমাদের ছোট গাঁয়ের নদীটি
------------------------------   

এখনও গাঁয়ের পাশে বেহায়া নদীটি...

লীলাপিসির হলুদ পাখি মৃত পালক ভাসিয়ে চলে গেছে বহুকাল
তবুও
গুড়িগুড়ি মেঘ থেকে জল নেমে ভিজে যায় নদীটির বুক।

জলতরঙ্গ বাজে না
কে তুলবে সেই অদ্ভুত সুর!

পাড়ের ধু ধু বালুচরের পায়ে গ্রহণ লেগেছে
আধো ঘুমে একলা নাওখান অপেক্ষার অভিনয় করে
অশ্রুহীন কান্নার মতো ডাক দেয় দুপুরের বাতাস

একজন
আজকাল বেহায়ার আশে পাশে ঘুর-ঘুর করে
চোখের আস্কারায় পচে হেজে যাওয়া 
নদীর মজা বুকে অশ্রু আবারও টলমল করে

আর পারবে না, তবুও
এই যে গাঁয়ের ছোট নদী আকে-বাঁকে চলতে চায়,
তাকে আমি বোঝাই কি করে!



দুই....

কথার কথা
--------------- 

নিদৃষ্ট সময় পর কথারাও অনেকটা 
পরিত্যক্ত ঈশ্বরের মতো
নিঃসঙ্গ একাকী---
দোকা হলেই ঠোকাঠুকি অনিবার্য।

রাত গড়িয়ে আরো গাঢ় হয়ে এলে
কথারা অনুভব সাজায়, 
আহাম্মুকে আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে
জিহ্বার গোড়ায় ঢেলে দেয় সামগান
বেজে ওঠে ধার করা সানাইয়ে বিসমিল্লার সুর;

আর শান্তশিষ্ট লেহ্যপেয় কথার 
আড়ালে ছারখার করে পোড়ে
ঘর-দোর, লেপ-তোষক, হাঁড়ি-কুড়ি...

আবার সকাল হয়।

ঝকঝকে তকতকে নিকানো অ-সুখ
পরিপাটি আঁচে সুখ রান্না করে,
কলজে পোড়া রোদ 
দাওয়ায় পা ছড়িয়ে বসে কালোয়াতি গায়।


তিন....


এরই নাম প্রেম
----------   

কখনো কিছু আলো
এখনো ঝাপসা হয়ে আসে সূর্যাস্তের মতন

কখনো কিছু কথা
এ অবেলায় এখন পরকীয়া বলে মনে হয়

কখনো কিছু ভুল 
জমাট রক্তের অক্ষর হয়ে কোথাও থেকে যায়

তখনো---

অসময়ের কিছু প্রেম
আগুনে আজও পোড়ে, বেশ বোঝা যায়

বহুকাল পরে 
দুটি গোপনীয় নদী এখানে মোহনার মুখ খুঁজে চলে, এখনও।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন