১)
** মনজিল**
মেঘের পালঙ্কে জেগে থাকা
নাজুক নক্ষত্র
যেন বিদ্যাপতির বর্ষা মেখে গায়ে
প্রতিফলিত আকাশ চাদরে ।
বাদী , সম্বাদী লাগিয়েও
মন ভরে না তার
পোয়াতি জোছনায় বিবাদী ভরে ঘরে
মেঘ ফুঁড়ে এল স্ফটিক বিবাদী ।
কিছু গমকে , আয়েশি গিটকিরিতে
বর্ষা নামল সারেঙ্গীর ছড় ছুঁয়ে
আখতারি বাঈ এর পরদেশিয়া
আঁতর নেয়ে উদাসীন -
ভিগি রাতে সে হবে পাগল- প্রেমিক
নক্ষত্র ঘুমায় পশমিনার আড়ালে
জমাট আঁধারে জড়িয়ে আছে
একাকিনী রাধা
তাঁর কাজল- কালো চুল এলিয়ে
বর্ষা ঘণায় আষাঢ়ের নীরব আঁখিতে ।।
*************************************
২) ** নারীর সাজে**
এক বস্তা ব্যথা নিয়ে নদীর কাছে ছুটে গেলাম
সেও দেখি আমারই মতন শোক- যাতনায় ডুবে গিয়ে
রুক্ষ-বুকে, শুষ্ক-মুখে শুয়ে আছে
ধুলো পিঠে আলের ধারে
আমায় দেখে পিছন মুড়ে নির্বিকারে শয্যা পাতে ।
ওর ব্যথাটা আমার বুকে কেমন জানি বাজ হানল -
একি ! তোমার মলিন আধার শুষ্ক কেন ?
তুমিও কি আমারই মতো ...
বলেই হঠাৎ নদী এক পলকে ঊর্ধ্বপানে চোখ মেলল ।
আমি তো দেখেই অবাক !
মেঘের জঠর ভেদ করে
কালীদাসের মেঘদুতম্ উঁকি মারছে -
পলক আমার কেড়ে নিয়ে নদী বলে
চলতো এবার এক ছুট দিই নিজের মতো
ততক্ষণে আদ্র ব্যথা শুষে নিয়ে
এক নিমেষে বর্ষা আমার সঙ্গী হয়েছে ।
গর্ভবতী ধানের ওপর আমায় ফেলে
চিবুক ছুঁইয়ে, কানের দ্বারে আলতো
বারি-বিন্দু দিয়ে গেল ; ভালোবাসি ,ভালোবাসি ...
এই প্রথম ওর শরীরে আমি মিশে
সিক্ত নারীর আখ্যা পেলাম ।
ভ্রান্ত ধারণায় বন্দি ছিলাম নারী সাজার প্রথম ধাপে
নতুন শিশুর অবয়বে , বর্ষ শেষের অনুভবে
বর্ষা যেন ঘিরেছে আমায়
ওর ছোঁয়াতেই চোখ মুদলাম
স্পর্শ সুখের উল্লাসেতে -
যৌবনের দৌড়গোড়াতে পোঁছে গিয়ে
আমার সুখের দোসর হয়ে ,
আমার তরী বাইয়ে দিল এক উজানে ।
পরম্পরা জিইয়ে বাদল
আমার শরীর-ঘরে শীতল পাটি বিছিয়ে নিয়ে
যাত্রা পথে তৃপ্ত হল -
সে আস্বাদে আমার প্রথম নারী হওয়া ।।
*********************************************
** আচমকা বারিষ **
তোমার আঙুল ছুঁলে বারিষ নামে
মেঘের শরীর ছেড়ে
ভেজা বন্দিশে ভিজল শরীর
সকাল – সন্ধিক্ষণে ।
পেঁজা তুলো আমায় ছুঁলে
মন্দ তুই পুরুষ
ভিজে আকাশে চাঁদ নেয়েছে
উধাও কালপুরুষ ।
পাখপাখালি আমার বুকে
আকাশ হলে কালো
সোহাগ মাখা কূজন আবেগে
বারিষ আচমকা নামল ।
সকাল জাগে আমার মতো
শবরীর প্রতীক্ষায়
অ্যাহেসাস - এ বাষ্প বিন্দু
গোপন চিলে কোঠায় ।।
ভালো লাগল
উত্তরমুছুন