হেরা মলাই
১.
আমাকেও সেদিন ঘর ছাড়তে হবে। যেদিন বুকে উড়ে আসবে পারাবত। জানি, তাদের দিকে
সমস্ত জোশ ও জাগরণ খুইয়ে দিতে হবে আমায়। এই ঊনত্রিশে দাঁড়িয়ে ভাবি, আমি কেন
এত দোষ করেছি? কেন আড়াল করতে পারিনি বুকের অনুতাপ। নারী থেকে এযাবৎ
যেটুকু ছিনিয়ে নিয়েছিলাম নিজস্ব কৌতুক। তাতে হয়েছি আমি বদ। আমি বিশাল কাঙাল,
যে দোষের আগে ফুটিয়ে তুলেছিল ছড়িয়ে থাকা গোলাপের শব। আমি কষ্ট পাই। স্রোতে
ভিজে যাওয়া জুতোয় হেঁটে এসে বাবার কাছে বলি, তুমি কেমন আছো? আজকাল নিথর হয়ে
থাকি, যে দোষ আমার নয় তার ভার নিতে নিতে... আর তখন এই সংসার আমাকে কেঁপে
কেঁপে বলে , তুমি সেই হেরা মলাই।
২.
আজকাল কোনো নেশা নেই। মেয়ে মানুষের থেকে দূরে দাঁড়িয়ে আমার চিবুক। যে সব
মূহুর্তে আমি কেঁদেছিলাম,তাঁদের জানলা ভেঙে এসেছিল আমার কাঁধে, একমাত্র মা। মা
বলেছিল আমার বাচ্চা বাবু পরিবারের নাম রেখো। আজকাল চুপচাপ বসে থাকি। পাহাড়ে
ঘুরে ঘুরে সাইকোর মতো বাঁচি। কখন কোথায় কে বদনাম করে দিতে চায়, সে তো সীমূম
হাওয়া! পাহাড়ের মতো নয়। জানি না কিছুই। তবু বলি শানু তুই নিজের জন্য লেখ। কবিতা
লিখে তুই খেতে পাবি না। তবু তুই লেখ। বাঁচার মতো লেখ। সম্মানের মতো লেখ। যেখানে
নিজেকে ছিঁড়তে পেরে নিজের পাড়া ছেড়ে বেরোবি তুই।
৩.
একা দাঁড়িয়ে মানুষ। যে জানলা কোনোদিন বোঝেনি পৃথিবীর ফুটিফাটা।সেই জানালার
গরাদে আজকাল আঠারো হাজারের জুতো ঝুলিয়ে রাখি। বিঁধে আসে বল্লম ছায়া ও ছবির
আকারে। মানুষের চেতনায় রুখে যায় তার সামান্য আভাস। তবু উঠোনে শব্দ হলে, বুঝতে
পারি আমার আর্থিক স্থিতির প্রগতি। কেঁপে ওঠে বীভৎস খবরের কাগজে মোড়া ওক
গাছের কৌটোটি...তবু কেন মনের ভিতর টিমটিম করে আহুতি? আমার দামি কাপড়ের
ছায়ায় জ্বলে ওঠে কার অবয়ব? এ পৃথিবী জানে না! একটা ফাঁক থেকে ছড়িয়ে যায়
আরেক ফাঁক। এই যেন তৈরি হওয়া ভাষার উন্মাদ ফুটে যাচ্ছে মাঠে। আর ঝরে পড়ছে
একক কথা বলার অভিজ্ঞতা। তবু ভাল আছি আজকাল। কারণ সুখে আছে মা,বাবা।
দারুণ লেখা শানু। ভালো থাকবেন
উত্তরমুছুন