এই ভরা বরষায়
এই ভরা বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে দেয়াল
ভেঙে পড়ে, গাঢ় অভিমান
ফোঁটায় ফোঁটায় নেমে আসে ঘাসবনে
গোপন কুঠুরিতে শিহরণ
রবিঠাকুর গুণগুণ, প্রেম রুনঝুন
হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি মাপি
সমস্ত জানালা খুলে ভিজে হাওয়ায়
ডানা মেলে উড়ে চলি,
হাজার হাজার মেঘের আলপনায়
জড়িয়ে থাকা কল্পনারা হুলুস্থুল
এই অসহ্য বর্ষায়
গোটা শরীর ছুঁয়ে থাকে তিরতিরে ক্ষণিকের সুখ।
আমি যা চাই
আজ, তুমুল শ্রাবণে
পার্কের সামনে ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে যে যুবক
তার মুঠোয় ভরে দিতে চাই প্রতিশ্রুতি
উথলে পড়া নর্দমার জলে
বৃষ্টি স্নানে মত্ত শিশুদের চোখে
এঁকে দিতে চাই ভবিষ্যৎ
শ্রাবণ আমায় আমার থেকে বিচ্ছিন্ন করে
আমি হয়ে উঠি নির্ভার, সতেজ
হাজার হাজার টুকরো করে
নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই ধূসর শহরে
পচা ডোবার গ্রামে
পৃথিবীর নির্মম মিছিলে।
শ্রাবণের সুখ
আকাশে ঝুলে শ্রাবণের মেঘ
অফিস যাত্রীদের মুখ ভার
শহরের রাস্তায় রঙিন ছাতার ভীড়
ফুটপাত বাসীর মাথায় হাত
তুমুল বৃষ্টি চাষির বিষন্ন মুখে হাসি ফোঁটায়
সবুজ হয়ে ওঠে খেত
গ্রামে কিংবা শহরে এসময় জানালার পাশে
কেউ কেউ উদাস বসে থাকে
ঝিরি ঝিরি জলকণায় স্বপ্ন মিশিয়ে খাতা ভরায়
নাক উঁচু সমাজ এদের আঁতেল বলে জানে
ভরা শ্রাবণে সুখের ডানায় বসে থাকে
কেবল চাষি আর কবি।
বৃষ্টি ব্যাঙ আর ইলিশ
খেয়াল করেছো, বৃষ্টি হলে
আজকাল আর ব্যাঙেরা ডাকে না
তাহলে কি ওরা হারিয়ে গেল?
যেভাবে শহর থেকে হারিয়ে গেছে স্থীরতা
হাসনুহানা ফুটলে সাপেরা মাতাল হতো
টুক করে গিলে ফেলত ব্যাঙ
শিকার হওয়া ব্যাঙেদের আর্তনাদ তুমি শোন?
চারপাশে শাসকের চিবিয়ে খাওয়া মুখ
ঘরে ঢুকে পড়া রাজনীতি
ডাস্টবিনে ফেলে যাওয়া শিশু
লক্ষ লক্ষ মরা অভিশাপ ছায়া হয়ে কাঁপে
খোপে খোপে বাইশ ডিগ্রি তাপমাত্রায়
প্রোরচিত হচ্ছে লোভ, বাইরে গলে পড়া
সূর্যের তাপে যুদ্ধরত সৈনিক
এবার মেঘ ঘন হয়ে এলে চল ব্যাঙেদের খুঁজি
ততদিনে শহরে এসে যাবে ইলিশের শব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন