লখিন্দর
-১-
তোমাকে দেখবার আগে একবার যদি ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনতাম, বুঝতে পারতাম অন্ধকার কীভাবে
গাঢ়তর হয়, কীভাবে শোক ঝরে পড়ে সংক্রমিত ক্ষতস্থান থেকে!
-২-
আর চাইবো না আমি, এইসব রুটি-ভাত, গুড়-চিনি জীবন। আম কাঁঠালের শরীর থেকে ছিনিয়ে নিয়ে
আসা উত্তপ্ত জ্যৈষ্ঠের ভালোবাসা। আমি এবার থেকে আমলকীর শোক কামনা করি।
-৩-
তোমার কাছে মধুমাস বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। শ্রাবণের শুক্লা পঞ্চমীতে শীতল সরীসৃপের ফণায়
ঢেলে দিয়েছি কালো গাইয়ের গরম দুধ। ছোবল খেয়ে বিষাক্ত হয় গোটা শরীর, বর্ষা নামলেই!
-৪-
নরম হাসনুহানার পর্দা লাগাও জানলায়। চৌকাঠে নিমীলিত গন্ধরাজ। আর একটু রাত নামুক,
বেলিফুলের স্বপ্ন বিছিয়ে দেবো বিছানায়। নইলে জতই লোহা দিয়ে মুড়ে দাও, এ বাসর অসুরক্ষিত!
-৫-
এর চেয়ে মরে যেতাম, বেশ হতো! মান্দাস ভাসিয়ে দিতে অনন্ত প্রবাহে! অন্তত ঢেউয়ে ঢেউয়ে
বিরহগাথা লিখে রাখতো কেউ! আমি নই, তুমিই নাহয় অমরত্ব লাভ করতে!
-৬-
বৃষ্টি নেমেছে অনেকক্ষণ। জলের ছাটে ভিজে যাচ্ছে পাতলুন, পাজামা। ঘন সবুজ অরণ্যের গন্ধ
আসছে হাওয়ায়। বুকের ভেতর মাতাল বীণ। বুঝতে পারছি, ঝাপান গাইছে কেউ, খুব খুব কাছেই!
-৭-
কেন ফিরিয়ে আনলে আমায়! এই ঘৃণা, ক্লেদ, জিঘাংসার স্মরণী বেয়ে কেন স্বর্গচ্যুত করলে,
বলো! তুমি যতই নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করো আমায়, জেনে রেখো এই শরীর প্রথম স্পর্শ
করেছে ওই কালনাগিনীই!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন