দৌড়
বিক্ষিপ্ত কথোপকথনগুলি চলেছিল দিনভর
বাইরে তখন নৌকোর ছায়া, আরও কত কী প্রস্তুতি
শান্তিকামী বক ক্রোশ-ক্রোশ দূরের অস্পষ্ট আকাশরেখায়
ঘর ভরতি বিদ্যুৎ আলো তখন হলুদ মায়াটিপ,
পুরনো কাগজের ঢিবি থেকে বিফল শার্সিভাঙা অনায়তন;
কনুই অবধি এই পাটভাঙা বর্ষা চলেছিল
সারাটা শৈশবে অনুমানে আমাদের পাশেই ছিল
এমন ঝলমলে সাইকেল এবং সমবেদনা,
গাঢ় চিবুকের যেন কত-কত প্রতিধ্বনি সুদূর ঘরে হারাত
আমাদের গাল টিপে ধরেছিল সেসব বিশুদ্ধ পাখিরা
এখনও বৃষ্টি হয় তারা কাগজের নৌকো মুখে ক’রে
ছেলেবেলার বৃষ্টি
মাটির ওপরে ওই যে একমুষ্টি শ্যাওলা ঘর
কোন গভীর খুঁড়ে আকাশবর্তী হয় বিপন্ন শামুক সেখানে
যেন পেছন ফিরলেই চুরি ক’রে নেবে অবিন্যস্ত শ্রম
একলা কুসুম ছেলেবেলার
দীর্ঘ উঁচানো কন্ঠস্বর নেমে যেত
জল-জল নৌকোঘরে বাতিল কৌটোর ভেতরে
ডিম ফোটাবার গন্ধে
বিষণ্ণ পিঁপড়েরা মুখে-মুখে বয়ে নিয়ে যেত শালিক-সুখ
পরিহারের হলুদ বর্ণ
নরম সবুজ রোঁয়ায় ভ’রে উঠত আমর্ম;
দু’হাতে মুঠো ক’রে আমাদের চোখ-চোখের ছায়ায়
গাঢ় মাটির মণ্ড বৃষ্টির সহস্র ধরনে গ’লে পড়ত
জমকালো পৃথিবীর ছাউনি ছিন্ন পাতার আবৃন্ত কান্নায়
সুদূর রান্নাঘরের করুণ চুড়ির শব্দ সহসা উঁকি দিলে
চৌকাঠ-বারান্দা-আঙিনা
বড় ছায়াময় মনে হ’ত সারাবেলা
সান্ত্বনা
দু’পাঁচ কথা শিখে সরে গেছে এক আকাশ চাঁদ
সূক্ষ্ম ও পরিপূর্ণ একটা রাত্রির গন্ধে
সুদূর খিলানের মতো আকাশের
সমবেত স্মৃতি শুধু
অমৃত-বয়ান ,পাখির নির্লিপ্ত প্লবতা
এখানে একমাত্র বিকেল,
অন্যান্য আলোর চেতনায়
আমরা হাত রেখেছি একে অপরের পিঠে
সন্ধান
জনতা জাহাজের দিকে আমি
ঝাঁপ দিয়েছি বিবশ
বোমারু হৃদয়ে
নির্জন পলাতক দুপুর আর নিটোল সসার নিয়ে
নীরবতার জল আমার পা টেনে ধরেছে
দিগন্ত, যেন দুরাশার মতো ফুঁড়ে ওঠে
তামাম সমুদ্রে
প্রতিবার বেঁচে থাকার জন্য স্বরমন্থন –
নিখিল থুতু গড়িয়ে নেমেছে রঙের মূর্ছনায়
এ সমস্ত নিষিক্ত ফলে অবারিত মৃত্যুর মতন
কিছু দাগ রেখে যাওয়া কবিতা...
উত্তরমুছুন