রবিবার, ২০ জুন, ২০২১

অন্তর চক্রবর্তী

                        



ছুটি

————————

দস্যুপলক মাঠ ছাড়াল
ছুটল দুপুর দিগ্বিদিক 
মেঘের দিকেই গড়িয়ে গেল
শেষ প্রহরের মাধ্যমিক

পন্থা হারায় সরলরেখা 
জংলা সে বাঁক লিখছে ঝড়
বিদ্যাপীঠের আগল পেল
বাদলবিধুর আকাশঘর

হদিশ পিছোয় দশমিকের
অকালশ্রাবণ দিব্য সুখ
শেষ পাতাটির অমিল যারা 
শূন্য আলোয় লুকোক মুখ

কোন কূলে আজ রইল কথা?
অন্ত্যমিলের কপর্দক 
বাদলকিশোর জড়ায় কাঁধে
গনগনিয়ার অনোন্যক...

( ২০১৭ )

( কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ইন্দ্রনারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় )


প্রাক্-শ্রাবণ
————————

স্বপ্নের ভেতর উল্টে যায় অনেককিছুই। পথ, ঘর, ইচ্ছে, মন, মানুষ। আরো কত কী। তবে গতস্বপ্নে ঠিক কী কী ওলটপালট হয়েছে, মনে নেই বিলকুল। স্বপ্ন দেখেছি কিনা, তাও মনে করতে পারছি না। ঘুম ভেঙেই চমকে উঠেছি। এ কেমন উলটপুরাণ! শুয়ে আছি বল্গাহীন নীলটির কোলে। শ্যামলা অনন্তছাদ থেকে অনবরত ঝরে পড়ছে মহীরুহ, চারাগাছ, গুল্মশিশুরা। অজস্র সবুজ উপড়ে আসার প্রখর শব্দে শিথিল হয়ে আসছে আলো। আশরীর নীলাভ শয়ান হয়ে উঠছে ঘনঘোর কাজরী দিকশূন্য। ঢুলে আসছে চোখ।

ঠিক তখনই, আবার স্বপ্নের ভেতর ঢুকে পড়ছি আমি। উপুড়-হওয়া চরাচর উল্টে যাচ্ছে ফের। অঝোর বৃক্ষরঙ রুমঝুম বেয়ে আমারই অশ্রুদল ঔরসের সুরে বিঁধে যাচ্ছে, খাঁ খাঁ অরণ্যের সদ্য সন্ততিশোকে...

( ২০১৮ )

( কৃতজ্ঞতা স্বীকার : সুশীলাপর্ণা বইঘর )


বাদর
——————

তিনকলি টুপটাপ? মনে পড়ে তোর?
আষাঢ়, শ্রাবণ, আর, এ মাহ ভাদর

নিরালা সাঁকোটি শুয়ে পুনর্ভবায়
একলা ছাতার ঠাঁই যায়, উড়ে যায়

দু'জোড়া অবাধ চোখে বৃষ্টিবাতাস
ঝিনুকঠোঁটের কোণে থেমে আছে শ্বাস

ডুব, ডুব, ডুব, দোলে ছায়ামরশুম
বিরহী আলোয় কাঁপে বিকেল নিঝুম

নিথর চিঠির ভাঁজে অপলক স্নান
ঠিকানাশিবির নেয় সুদূর ভাসান

শীত ছুঁয়ে ভেঙে যায় মেঘের বরাত
হরি বিনে কীভাবে যে কেটে যায় রাত

তিনকলি রিমঝিমে লেখে স্মৃতিচোর
দু'ফোঁটা নয়ন, আর, এ ভরা বাদর...

( ২০১৮ )

( কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ঝিনুক ও পুনর্ভবা )

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন