রবিবার, ২০ জুন, ২০২১

পিয়াংকী

                                                              



আঙুলের আড়াল আর ভরসন্ধ্যার পুরুষ 



কচুপাতায় জল। টলটল করে, ধরে রাখা যায়না। ঠিক যেন একমুঠ আদর।আলগা হলেই পড়ে যাবে অন্য কোনো বাড়ির ঠিকানায়,তখন টিনের চালে দুমদাম শিল পড়বে,টুপটাপ টিপটিপ লাখো মুদ্রায় নৃত্য হবে নটরাজের শরীরের সর্বত্র  

চুপচাপ বসে থাকা,জানালা খুলে রাখা  হাট করে।হুটহাট করে ঘরে ঢুকে পড়বে কেউ, সেই আকাঙ্খা দিয়ে ঘিরে থাকা হাজারো অলিগলি। 

আষাঢ়ের ভরসন্ধ্যা, দুপুরের গাকাপড় সংসারপাড়ায় অপবিত্র। ঘরে পুরুষমানুষের অবিরাম চলাফেরা, সাবানজলে উলঙ্গ নিজেকে ঘষে ঘষে ধুয়ে এসে জড়িয়ে নিয়েছ বারোহাত ধনেখালী তাঁত। সিংহাসনে নারায়ণ আর লক্ষ্মী।   কপালের সিঁদুর লেপ্টে গেছে একজনের বুকের ঘরে। তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ভক্তরা। এলোমেলো চুলে তেল পড়েনি অনেককাল,তবু উড়তে উড়তে সে পার করে ফেলেছে সাত সাত্তে ...

মহাদেশ মহাসাগরের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে আছ,দূর থেকে দু'চোখে দেখে নিচ্ছ ভেজা-ভেজা কচুপাতা।কোঁচড়ভর্তি কাঁকর। রাস্তার ধার ঘেঁষে ফেলতে ফেলতে গেলে তার চিহ্ন নিয়ে ঠিক খুঁজে পাওয়া যাবে প্রিয় ঘর।  

ভীষণরকম বলতে কী বোঝায়?তীব্র শব্দের অর্থ কী? প্রবল কি বিশেষণ? বিশেষ্য বরং আপনাদের সাথে অনেকটা একাত্ম তাই না?

প্রশ্নের উত্তরে শুধুই দাবদাহ। 

দেখতে গেলে কতকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে   অথচ জীবনভর শুধু আলেয়াআলো থিতিয়ে রাখে সব।  ঘনিষ্ঠ হতে হতে ঘন হয়ে আসে চাহিদা। মধ্যের  দূরত্ব এক গজ থেকে একটা বিন্দু হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও  গজগজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে দু'জন, আরো একবার ধুয়েমুছে উঠিয়ে নেয় রান্নাঘরের বাসনকোসন, কানাউঁচু থালা ছাড়া সে ভাত খেতে পারে না।পায়েসে কিসমিস পড়লে বিরক্ত হয়ে তাকায়। কলাপাতায় ভেটকিপাতুড়ি আর ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতে দেশিমুরগির ঝোল পেলে নরম তুলতুলে নজরে চেটে নেয় রাঁধুনির আঙুল 

এভাবেই চলে যায় সাজানো-গোছানো মে।একটু একটু করে জুন আসে আর খনিতে পড়ে থাকে আমার স্লিভলেস ব্লাউজ কলমকারি শাড়ি তিনঝুমকো পায়ের নূপুর হাতের বালা। ছাদে ওঠার মাঝসিঁড়িতেই পেছন পেছন পা টিপেটিপে উনি আসেন, জড়িয়ে ধরেন তলকোমর। 

জুলাইয়ের পুকুরে তখন ভরপেট কচুরিপানা, খেজুর গাছের নোয়ানো ডালে মাছরাঙা খুঁটে খাচ্ছে কাকভেজা গাছের শরীর,  মাছেদের গায়ে শ্রাবণী তাপ।

...বর্ষা।ঝরছে অঝোরে। এই মধ্যযামেও জলের ছাঁট এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে শোবার ঘর।

আর্যপুরুষ, তুমি আমায় নদী বলে ডেকেছ, মেঘ বলেও ডেকেছ বহুবার।অথচ আমি তোমায় এজন্মে শুধু একপশলা ভারী বৃষ্টিপাত দিতে চেয়েছি

পেয়েছ কিনা, চিঠি দিও...

২টি মন্তব্য: